আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তুরস্কে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এদের প্রত্যেকের ৪৫ বছর করে কারাদণ্ড চেয়েছেন ইস্তাম্বুলের প্রসিকিউটর।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ইস্তাম্বুলের পাবলিক প্রসিকিউটর ‘ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক বা সামরিক গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগে এই সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন হামজা তুরহান আইবার্ক, ফুন্দা কাদায়িফাওগলু, এরকান কামা, ওমর বুরাক গেজার, ইসমাইল কায়া, মেহমেত ইয়েতিমোভা এবং ওজকান শাহিনকে মোসাদ এজেন্টদের কাছে তথ্য বিক্রি করেছেন। এর দায়ে ১৮ থেকে ৪৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাদের।
তদন্তে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ‘ভিক্টোরিয়া’ নামের ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার একজনের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করেন আইবার্ক। তিনি ২০১৯ সালে সার্বিয়ার বেলগ্রেডে ভিক্টোরিয়ার সাথে ব্যক্তিগতভাবে বৈঠক করেন। এ সময় তাকে আরও দু’জন মোসাদ এজেন্টের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মোসাদ যেসব ব্যক্তি ও কোম্পানিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি বলে মনে করে, সেগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে আইবার্ককে নির্দেশ দেয়।
‘মার্ক’ নামে আরেকজন মোসাদ এজেন্ট আইবার্ককে দুবাই, ইরাক এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সংযোগ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছিল। এ সংশ্লিষ্ট নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য এবং নথি পাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছিল। বিনিময়ে তাকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে প্রচুর পরিমাণে অর্থ প্রদান করা হয়েছিল।
অভিযোগ অনুযায়ী, আইবার্কের মোট ৯৮টি অ্যাকাউন্ট ছিল, যার মধ্যে ৬৩টি সক্রিয় ছিল তুর্কি ব্যাংকে। এই অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১৯-২০২৩ এর মধ্যে মোট ১ লাখ ১৮ হাজারের বেশি মার্কিন ডলার লেনদেন দেখা গেছে।
সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিজেই ভিক্টোরিয়ার সাথে দেখা করার কথা স্বীকার করেছেন। আইবার্ক আরও নিশ্চিত করেছেন, তিনি আইনি পথ এড়াতে মোসাদকে বিটকয়েনে অর্থ প্রদান করতে বলেছিলেন।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত যখন তুঙ্গে, তখন তুরস্ক দেশটিতে মোসাদ পরিচালিত বেশ কয়েকটি নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের মোসাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে কয়েক ডজন লোককে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত মার্চে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের, বিশেষ করে প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির জন্য তুর্কি নাগরিক এবং দেশটিতে বসবাসরত অন্যান্য জাতীয়তার লোকদের নিয়োগের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মোসাদ তুরস্কে বসবাসরত বিদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে তুরস্কে ফিলিস্তিনি ও সিরিয়ার নাগরিকদেরও নিয়োগ দিয়েছে বলে জানা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।