বিনোদন ডেস্ক: অভিষেক চট্টোপাধ্যায় অকালেই চলে গেছেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে এক বিতর্ক। ফের একবার টালিগঞ্জের নেপোটিজম বিতর্ককে উসকে দিয়েছে এই মৃত্যু। অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর এবার কলম ধরলেন শ্রীলেখা মিত্র।
কলকাতার একটি গণমাধ্যমে শ্রীলেখা জানান, ‘টলিউড ইন্ডাস্ট্রি যে কথা চাপা রেখেছিল, মিঠুদা চলে যাওয়ার পরেই তা যেন তেড়েফুঁড়ে উঠল। ’
শ্রীলেখা টেনে আনেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের এক বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারের কথা। যেখানে নাম না উল্লেখ করেই ইন্ডাস্ট্রির এক ‘দাদা’ ও ‘দিদি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, কেমনভাবে চক্রান্ত করে অভিষেককে পরপর ২২টা ছবি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল সেই দুজন। এদিন শ্রীলেখা লেখেন, ‘দাদা, ‘দিদি’র নামে কিছু বললেই অন্যরা যেন কেমন অস্বস্তিতে পড়ে যেতেন। যেন, ওঁদের নিয়ে বলা বারণ। কিন্তু সেই মিঠুদার মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী সংযুক্তা (চট্টোপাধ্যায়) যেভাবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য কথা বললেন, তাতে তাঁর কষ্টটা অনুভব করতে পারলাম। ‘
অভিষেকের মৃত্যুর পর অর্থকষ্ট ভুগছে তাঁর পরিবার, প্রয়াত অভিনেতার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন কলকাতার এক নামি অভিনেতা ও অভিনেত্রী। তাঁরা ১০ লাখ ও ৫ লাখ টাকা অর্থ সাহায্য করেছেন, এমনই মিথ্যা রটনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান অভিষেক ঘরণী। সবটাই ভুয়া ও ভিত্তিহীন বলে প্রকাশ্যে জানান তিনি।
ইন্ডাস্ট্রির এই ‘দাদা’ ও ‘দিদি’র বিরুদ্ধে বছরখানেক আগেই মুখ খুলেছিলেন শ্রীলেখা। ব্যক্তিগতভাবে নায়িকার সাহসকে কুর্নিশ জানালে কেউই প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। আক্ষেপ করেই বললেন শ্রীলেখা। তিনি বলেন, সেই প্রভাবশালী ‘দাদা’, ‘দিদি’র ভয়ে তাঁরা মুখ খোলেননি। আমি চলে যাওয়ার পরে হয়তো তাঁরাও মৌনতা ভাঙবেন।
এদিন স্পষ্ট করে কোনো ‘দাদা’, ‘দিদি’র নাম নেননি শ্রীলেখা। তবে তাঁর ইশারা কাদের দিকে তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি লেখেন, ইন্ডাস্ট্রির যে মানুষরা দাবি করেন, ‘আমরা ইন্ডাস্ট্রির মুখ, আমরাই বাংলা ছবিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি’ তাঁদের মনে রাখা উচিত, প্রযোজকদের থেকে টাকা পেয়ে তাঁরা কাজ করেছেন, বিনা পয়সায় কিছু করেননি। এদিন আরো একটি বিস্ফোরণ ঘটান শ্রীলেখা। তিনি লেখেন, ‘দিদি’র সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পরেই নাকি অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে একের পর এক ছবি চলে যায়। কারণ তখন ‘দিদি’র জীবনে ‘দাদা’র প্রবেশ ঘটেছে। ‘দাদা’র সব সিনেমাতেও ‘দিদি’ই নায়িকা। শ্রীলেখা ক্ষোভ ঢেলে দিয়ে লেখেন, ‘দাদা’র সঙ্গে আমার একটি ছবি সুপারহিট হওয়ার পরেও ‘দাদা’ আর আমাকে কাজে ডাকেননি।
এদিন কারো নাম নেননি শ্রীলেখা। তবে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার উদ্দেশেই যে তাঁর এই ‘খোঁচা’ তা স্পষ্ট। এটা সবার জানা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ‘ফেবারিটিজম’ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী। তাঁর সরাসরি অভিযোগ ছিল, প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার প্রেম ছিল বলে ছবি থেকে বাদ পড়েছেন তিনি।
নিজের লেখনীতে শ্রীলেখা প্রসেনজিতের ফুড ডেলিভারি অ্যাপ মারফত খাবার বাড়িতে না পৌঁছনো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীকে নালিশ জানানোর ঘটনা, বা ঋতুপর্ণার সাম্প্রতিক বিমান-বিতর্কের কথাও উল্লেখ করেন।
সব শেষে শ্রীলেখার বক্তব্য, তিনি ক্লান্ত বলেই প্রতিশোধ নিতে আগ্রহী নন, তবে ‘কর্মফলের ক্লান্তি নেই’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।