জুমবাংলা ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে যখন উদ্বিগ্ন সারাদেশের মানুষ, তখন সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপে ভেসে এলো পরিত্যক্ত এক জাহাজ। মানবশূন্য ওই জাহাজটিকে ঘিরে দানা বাঁধে রহস্য, অনেকে একে ‘ভুতুড়ে’ও বলতে থাকেন। কিন্তু, আসলেই কি এটি কোনো ভুতুড়ে ঘটনা? ঝড়ের সময় পরিত্যক্ত জাহাজ ভেসে আসার এমন ঘটনা কিন্তু অস্বাভাবিক বা নতুন কোনো ঘটনা নয়।
সেন্টমার্টিনে ভেসে আসা পরিত্যক্ত ওই নৌযানটি নাবিকরাই বাংলাদেশে এনেছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে কেনো এবং ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় জাহাজটি পরিত্যক্ত হলো সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি এখনও। কারণ, উত্তর দেয়ার জন্য জাহাজটিতে কোনো মানুষ ছিল না।
আসলে এ ধরনের জাহাজে মানুষ থাকার কথাও নয়। এ ধরনের জাহাজগুলিকে বলা হয় ‘বার্জ’। বার্জ হচ্ছে, মালবাহী নৌযান, যেটিকে অন্য কোনো নৌযান বা টাগবোট দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। বার্জের সাধারণত নিজস্ব ইঞ্জিন থাকে না। এক কথায়, সকল বার্জই জাহাজ, কিন্তু সব জাহাজই বার্জ নয়।
পুরাতন ওই জাহাজটির গায়ে লেখা আছে ‘এমআর ৩৩২২’। এ নামের সূত্র ধরে জানা গেছে, এই বার্জটি মূলত সিঙ্গাপুরের একটি মালবাহী বার্জ। মেরিনা টোয়েজ প্রাইভেট লিমিটেডের মালিকানায় নিবন্ধনকৃত এ জাহাজটি ১১০.৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৩০ মিটার চওড়া।
জাহাজটির নিবন্ধনের তথ্য থেকে আরও জানা গেছে, ২০০৮ সালে তৈরি করা এ বার্জটি ১০ হাজার টন পর্যন্ত মালামাল বহনে সক্ষম।
জানা গেছে, খুব বেশিদিন আগে পরিত্যক্ত হয়নি জাহাজটি। চট্টগ্রাম বন্দরে আগত জাহাজের তালিকা বলছে, এই নৌযানটি চলতি বছরই একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছিল। সর্বশেষ ৮ই সেপ্টেম্বরে বার্জটি মালয়েশিয়ার একটি বন্দর থেকে প্রায় নয় হাজার টনের বেশি পাথর বহন করে এনেছিল। মালামাল খালাস করে ক্যাপ্টেন এবং ক্রুসহ কয়েকদিন আগেই বার্জটি নিয়ে একটি টাগবোট চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যায়।
জানা গেছে, জার ওয়ার্ল্ড লজিস্টিকস নামের এক স্থানীয় এজেন্ট এ জাহাজটি ভাড়া করে এনেছিল। তবে জাহাজটি কেনো, কীভাবে পরিত্যক্ত হলো সে সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি তারা।
কোস্ট গার্ডের ধারণা, বার্জটি যেভাবে ভেসে এসেছে তাতে মনে হচ্ছে সচেতনভাবেই এটিকে পরিত্যক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারিগরি গোলযোগের কারণেও বার্জটি পরিত্যক্ত করা হতে পারে। আবার সিত্রাং এর প্রভাবে আবহাওয়ার খারাপ থাকায় বার্জটি টাগবোট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। সে প্রশ্নের উত্তরও নিশ্চয় শিগগিরই মিলবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।