বিনোদন ডেস্ক : কুড়িগ্রামে এক অনুষ্ঠানে মঞ্চে ওঠার আগে আয়োজকরা মদ সরবরাহ করেছিল বলে দাবি করেছেন সংগীতশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল। তিনি বলেন, সেই মদ তিনি খেয়েছিলেন। তবে মাতাল হননি। তবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মদ সরবরাহের বিষয়টি নাকচ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব বলছেন, কোথায়, কীভাবে তিনি মদ পেয়েছেন তা জানা নেই।
গেল ২৭ এপ্রিল কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের সুর্বণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে গান গাইতে মঞ্চে উঠে অসংলগ্ন আচরণ করেন নোবেল। সেই সময়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা। এ বিষয়ে সম্প্রতি স্থানীয় এক সংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন নোবেল। এরইমধ্যে এই সাক্ষাৎকারটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে, যা নিয়ে নেট দুনিয়ায় প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
মঞ্চে ওঠার আগে কী হয়েছিল-এমন প্রশ্নের জবাবে ফোনে নোবেল বলেন, সেদিন মঞ্চে উঠার আগে আয়োজকদের পক্ষ থেকে সরবারহ করা সিগনেচার ব্র্যান্ডের মদ পান করি। তবে আমি মাতাল হইনি। এটা স্রেফ একটা দুর্ঘটনা। আমি আবারও ওই মঞ্চে গান করব।
অডিওতে শোনা যায়, আমি দুই-তিনটা ক্লাবের সদস্য। আমার মদপানের লিগাল লাইসেন্স রয়েছে। সেদিন অনেকটা পথ জার্নি করে গিয়ে ডিহাইড্রেড হয়ে গিয়েছিলাম। এমন না যে সেদিন আমি মাতাল ছিলাম। কোনভাবে একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। আমি রিকভার করে উঠতি পারিনি। ফলে আমার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বা কথায় সেখানকার আমার হাজার হাজার শ্রোতা কষ্ট পেয়েছেন। আমি সবার কাছে হাতজোর করে ক্ষমাপ্রার্থী। কথার এক পর্যায়ে বলেন, তাদের চেয়ে আমি পঞ্চাশগুণ বেশি কষ্ট পেয়েছি।
নোবেলকে আরও বলতে শোনা যায়, আয়োজকদের পক্ষ থেকে মদ সরবরাহ করা হয়েছিল। স্টেজে ওঠার আগে হালকা একটু রিলাক্সাশেসন, হালকা একটু ফিলিংসের একটু দরকার পড়ে। অতিরিক্ত পান করার ধারে কাছে যাইনি।
হেসে বলেন, এক বোতল সিগনেচার… ধরেন যে ব্যান্ড মেম্বাররা সবাই মিলা খাইলে সেখানে দুই এক প্যাগের বেশি পাওয়া যায় না। আসলে সিচুয়েশনটা অতোটা খারাপ যায়নি, যতোটা মানুষ তুলে ধরেছেন। শুধুমাত্র একটা বোতল ছুড়ে মেরেছিল। এতটাই আমি বলতে পারব। এমন না যে আমি আউট অব সেন্স ছিলাম।
শেষে আবারও তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত অনুতপ্ত এবং দুঃখিত। হাটু গেড়ে হাত জোর করে সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। এরকম ঘটনা আর ঘটবে না। ওই মঞ্চে আবারও অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা চলছে জানিয়ে বলেন, ওই মঞ্চে আমি গান গাইবো আবারও।
তবে অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বলছে ভিন্ন কথা। সেদিন নোবেল মদ পান করে স্টেজে উঠেছেন স্বীকার করলেও তাদের পক্ষ থেকে মদ সরবরাহের কথা নাকচ করা হয়েছে।
আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ফুলবাড়ি জছিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী বলেন, আয়োজকদের পক্ষ থেকে নোবেলকে মদ সরবরাহের প্রশ্নই আসে না। কোথায়, কীভাবে নোবেল মদ পেয়েছে, কোথায় পান করেছে তা আমাদের জানা নেই।
কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তিতে দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিনের দিনে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা হয়। ওই অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির আসার কথা থাকলেও তিনি অসুস্থ থাকায় যোগ দেননি। অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদসহ অনেকে।
ওই মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রিত ছিলেন কণ্ঠশিল্পী নোবেল। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে গান গাইতে উঠে অসংলগ্ন আচরণ করেন। ভাঙা কণ্ঠে একটি গানও করেন। পরে মঞ্চে মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ড ভেঙে ফেলেন। এক পর্যায়ে তাকে উদ্দেশ করে প্রথমে পানির বোতল ও পরে জুতা ছোড়েন দর্শকরা। অনুষ্ঠানটি অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করছিলেন। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমেও উঠে আসে। ওই মঞ্চে পরের দিন কণ্ঠশিল্পী মনিরখানসহ অনেকে সঙ্গীত পরিবশেন করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।