বরেণ্য সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। গত ছয় দশক ধরে আলোয় থেকে গানে গানে কোটি হৃদয় জয় করেছেন; যা মোটেও সহজ কাজ নয়। মজার ব্যাপার হলো, ক্যারিয়ারের এ পর্যায়েও স্টেজ শোয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে কথা বলা বন্ধ করে দেন এই শিল্পী। কিন্তু কেন এমনটা করেন, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই কিংবদন্তি।

কয়েক দিন আগে একটি টিভি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন রুনা লায়লা। এ আলাপচারিতায় সঞ্চালক জানতে চান, মঞ্চে গান গাওয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকে আপনি সবার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন। কিন্তু এমনটা কেন করেন? জবাবে রুনা লায়লা বলেন, “আমি ফোকাস করি। স্টেজে যাব কী ধরনের অডিয়েন্স হবে, তারা আমাকে কীভাবে নেবে, কী গান পছন্দ করবে, এন্ট্রি কীভাবে হবে, এক্সিট কীভাবে হবে—সবকিছু নিয়েই চিন্তা করতে থাকি।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে রুনা লায়লা বলেন, “এ সময়ে কেউ কথা বললে ‘হ্যাঁ’, ‘না’ ছাড়া আমি উত্তর দিই না। খুব বেশি জরুরি কিছু না হলে, তখন আমার সঙ্গে কেউ কথাও বলে না। আমার মাথার মধ্যে ওইটাই ঘুরতে থাকে। এখনো এত চিন্তা হয় যে, মনে হয় প্রথমবার স্টেজে উঠছি। আমার গুরুজনরা বলেছেন, ‘এটা ভালো, এখনো তুমি নার্ভাস ফিল করো। কারণ ওভার কনফিডেন্স হয়ে গেলে জিনিসটা অত ভালো হতো না। যেহেতু তুমি নার্ভাস থাকো টেনশন হয়, তার মানে, ‘ইউ ট্রায়িং টু ইম্প্রুভ, ট্রায়িং টু ডু সামথিং বেটার।”
শ্রোতাদের প্রত্যাশা অদৃশ্যভাবে রুনা লায়লার উপরে চাপ তৈরি করে। তা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “এই পর্যায়ে এসে এখন মানুষের প্রত্যাশা প্রতিদিন বাড়ছে। ফলে আমার কাঁধে চাপ বাড়ছে। কারণ আগের চেয়ে বেটার করতে হয়। না হলে বলবে, ‘আগেরটা ভালো ছিল, এখন গান হয় না।’ এরকম যেন না বলতে পারে, এই বিষয়টি মাথার মধ্যে কাজ করে। আগেরটার চেয়ে এটা আরো বেটার হতে হবে। অলওয়েজ ট্রায়িং টু ইম্প্রুভ, অলওয়েজ ট্রায়িং টু গো।”
দীর্ঘ সংগীত জীবনে ১৮টি ভাষায় অসংখ্য গান গেয়েছেন রুনা লায়লা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই শিল্পী ১৯৬৪ সালে ‘জুগনু’ সিনেমার গানে প্রথম কণ্ঠ দেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে তার গাওয়া ‘গুড়িয়া সি মুন্নি মেরি ভাইয়া কি পেয়ারি’ উর্দু ভাষার গানটির কথা লিখেছিলেন তিসনা মেরুতি, আর সুর করেছিলেন মানজুর। প্রথম গানের অনিন্দ্য কণ্ঠ আর অনবদ্য গায়কি দিয়ে মুগ্ধ করেন শ্রোতাদের। সেই সুবাদে এ শিল্পীর কাছে বাড়তে থাকে সংগীতপ্রেমিদের প্রত্যাশা। যে কারণে আর থেমে থাকার অবকাশ পাননি রুনা লায়লা। গানের ভুবনে শুরু হয় তার দুর্বার পথচলা, বাকিটা কারো অজানা নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



