জুমবাংলা ডেস্ক : বড় কোম্পানিগুলো চাল, ডাল, আদা, রসুন থেকে শুরু করে জিরা বা হলুদের গুঁড়া পর্যন্ত সবকিছুই বিক্রি করছে। এর ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজারে ব্যবসা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন রাজধানীর নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এমন বাস্তবতায় ছোট ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব রক্ষায় রাষ্ট্রীয় নীতি দরকার বলে মত দিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী। রাজধানীতে গতকাল ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি, মজুদ, সরবরাহ, মূল্য ও বাজার পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগে বনলতা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও নিউ সুপার মার্কেট (উত্তর) ডি-ব্লক দোকান মালিক সমিতি যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন নিউ সুপার মার্কেট (উত্তর) ডি-ব্লক দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আতিক উল্যাহ।
নিউ সুপার মার্কেট (উত্তর) ডি-ব্লক দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আতিক উল্যাহ খোকন বলেন, ‘বড় কোম্পানিগুলো ঝালমুড়িও বিক্রি করে, জিরা গুঁড়া, হলুদ গুঁড়াও বিক্রি করে। আর আমাদের কাছে ব্যবসা নেই। ওষুধ থেকে চাল, ডাল, আদা, রসুন, আলু সব ওনারা বিক্রি করেন। ওনাদের কিছু ব্যবসা কমিয়ে করতে বলেন। আমাদের মতো খুচরা ব্যবসায়ীদেরও একটু বাঁচতে দিতে বলেন। আমরা আর পারছি না।’ ভ্রাম্যমাণ আদালতের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ। সবকিছু বাজারের ওপর। আজ পর্যন্ত কেউ গিয়ে ওদের (বড় কোম্পানিগুলো) জরিমানা করেনি। তারা ওষুধে ভেজাল করে, অথচ জরিমানা করা হয় না।’
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এসব পণ্য খুচরা পর্যায়ে বিক্রির কারণে দাম বেশি দিতে হচ্ছে। আবার ছোটদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এখানে রাষ্ট্রীয় নীতি দরকার, কারা কোন পর্যায়ে ব্যবসা করবে। বড়রাও যদি ছোট আকারে বিক্রি করে, তাহলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কোথায় যাবে? এজন্য একটি নীতি থাকা দরকার। আমরা সরকারের কাছে এ ধরনের প্রস্তাব পাঠাব। এফবিসিসিআই থেকে এসব বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এফবিসিসিআইয়ের অধীন সব ব্যবসায়ী যাতে ট্রেড লাইসেন্সসহ যাবতীয় নিয়ম মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে, সেদিকে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। একদিনে হয়তো সব সমস্যার সমাধান হবে না। কিন্তু এফবিসিসিআই এ ব্যাপারে কাজ করছে। ভোক্তা কিংবা ব্যবসায়ীদের ভোগান্তির বিষয়গুলো নিয়ে বাস্তবভিত্তিক সুপারিশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রদান করা হবে। ভোক্তার ভোগান্তি লাঘব এবং ব্যবসায়ীদের ওপর যাতে অপবাদ না আসে সেজন্য এফবিসিসিআই কাজ করছে। তবে শুধু ভোক্তা কিংবা ব্যবসায়ীদের পক্ষে একতরফাভাবে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য উভয় পক্ষের সহযোগিতা দরকার।’
ভোক্তাদের কথা বিবেচনা করে এবং বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে আগামী ঈদ পর্যন্ত এফবিসিসিআই নিয়মিত রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট মনিটরিংয়ের পাশাপাশি সতর্কতামূলক সভা চালিয়ে যাবে বলে জানান মো. আমিন হেলালী।
নিউ সুপার মার্কেট (উত্তর) ডি-ব্লক দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ‘সমিতির পক্ষ থেকে বাজার পরিস্থিতি মনিটর করা হচ্ছে। তবে এফবিসিসিআইয়ের কাছে অনুরোধ, ম্যাজিস্ট্রেটের হয়রানি বন্ধ করুন। বাজারে পণ্য যদি বেশি দামে বিক্রি হয় তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট এসে আমাদের সমিতিতে বসুক। যদি সত্যিই বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি হয় তাহলে আমরা নিজেরা গিয়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করব।’
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, শহিদুল হক মোল্লা, কাওসার আহমেদ, নিয়াজ আলী চিশতী, সৈয়দ মো. বখতিয়ার, হাজী মো. আবুল হাসেমসহ নিউ সুপার মার্কেট (উত্তর) ডি-ব্লক দোকান মালিক সমিতি ও বনলতা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।