আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে চিঠি লেখার দিন প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এখন অনেকেই মেসেজিং অ্যাপস কিংবা ই-মেইল ব্যবহার করেন। তবে জাপানের একটি জায়গা চিঠি লেখার অভিজ্ঞতাকে এক ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। দেশটির সুসামি শহরে অবস্থিত একটি পোস্ট-বক্স রয়েছে সমুদ্রের তলদেশে! এই অদ্ভুত পোস্ট-বক্সটি চিঠি ফেলার জন্য সমুদ্রের গভীরে রাখা হয়েছে।
সুসামি শহর জাপানের ওয়াকায়ামা প্রিফেকচারে অবস্থিত। শহরটি মূলত মাছ উৎপাদনের জন্য পরিচিত হলেও তবে এটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবেও খ্যাত। শহরটির আশপাশের সমুদ্রতট পর্যটকদের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করে, বিশেষ করে যারা ডাইভিং করতে ভালোবাসেন। এই জায়গায় ডাইভিং করে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য উপভোগ করার পাশাপাশি এক অভিনব পোস্ট-বক্সে চিঠি ফেলার অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়।
১৯৯৯ সালে তৎহিকো মাতসুমোতো, একজন স্থানীয় পোস্টমাস্টার, একটি অভিনব আইডিয়া নিয়ে আসেন। পর্যটনকে উৎসাহিত করার জন্য তিনি সমুদ্রের তলদেশে একটি পোস্ট-বক্স স্থাপনের প্রস্তাব দেন। তার এই প্রস্তাব দ্রুত গ্রহণ করা হয় এবং ওয়াকায়ামা প্রিফেকচারের সুসামি উপকূলে একটি সাগরের তলদেশে পোস্ট-বক্স স্থাপন করা হয়। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর পোস্ট-বক্স হিসেবে পরিচিত এটি।
সুসামি উপকূল থেকে ১০ মিটার দূরে এবং প্রায় ১০ মিটার (৩২ ফুট) গভীরে সমুদ্রের তলদেশে এই পোস্ট-বক্স স্থাপন করা হয়েছে। এটি একটি সাধারণ লাল পোস্ট-বক্সের মতো দেখতে। সমুদ্রের নিচে ডাইভিং করে সেখােনে পৌঁছানো যায়। পর্যটকরা ওয়াটারপ্রুফ কাগজে এবং ওয়াটারপ্রুফ মার্কার পেন দিয়ে তাদের চিঠি লিখে পোস্ট-বক্সে ফেলেন।
এই পোস্ট-বক্সটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং প্রতিবছর হাজার হাজার চিঠি এই বক্সে জমা হয়।
প্রতি সপ্তাহে একবার ডাইভাররা এই পোস্ট-বক্স থেকে চিঠিগুলো সংগ্রহ করেন এবং সেগুলো স্থানীয় পোস্ট অফিসে নিয়ে যান। এরপর সেগুলো সাধারণ ডাক ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রাপকের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
২০০২ সালে, এই পোস্ট-বক্সটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেয়, বিশ্বের সবচেয়ে গভীর পোস্ট-বক্স হিসেবে। পোস্ট-বক্সটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে ৩২,০০০-এরও বেশি চিঠি এখানে পোস্ট করা হয়েছে।
এই পোস্ট-বক্সটি দেখতে এবং সেখানে চিঠি পোস্ট করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন। এটি শুধু চিঠি পোস্ট করা নয়, বরং সমুদ্রের তলদেশে ডাইভিংয়ের এক নতুন অভিজ্ঞতা দেয়। তাই যারা সমুদ্রতলে ডাইভিং করতে চান, তারা এই পোস্ট-বক্সে চিঠি ফেলার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহিত হন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।