জান্নাতুল কাওসার : স্ট্রোক হলো ব্রেন বা মস্তিষ্কের রোগ। জনসচেতনতা যথাযথভাবে না থাকার কারণে দেশের বেশিরভাগ মানুষ স্ট্রোককে হার্টের রোগ মনে করেন। যার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা পেতেও দেরি হয়। এ বিষয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, রোগীর স্বজনরা স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান, অথবা হার্টের কোনো হসপিটালে চলে যান। স্ট্রোককে হার্টের রোগ মনে করে অন্য কার্ডিওলজিস্ট অথবা হার্ট হসপিটালে চলে যান, যার কারণে সেবা পেতে বিলম্ব হয়।
কেন হয়?
ডা. চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ এবং এটা হলো আমাদের মস্তিষ্কের রক্তনালিগুলোর জটিলতার কারণে এই রোগ হয়। রক্তনালিতে কখনো রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হয় এবং ব্রেনের একটা অংশের সক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। রক্তনালির কোনো অংশ কোনো কারণে ছিঁড়ে রক্তক্ষরণের কারণে ব্রেনের অংশ কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ ক্ষেত্রে স্ট্রোক মারাত্মক রোগ।
প্রাথমিক করণীয়
ডা. চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক হলে এক মিনিটে বা বাইশ লাখ নিউরন মারা যায়, এ জন্য আমরা বলি এভরি সেকেন্ড ইজ ভেরি মাচ ইমপোর্টেন্ট ফর পেশেন্ট। এ জন্য রোগীদের প্রতিটা সেকেন্ড মূল্যবান। সময় ব্যয় না করে যখনই আমরা মনে করব স্ট্রোক হয়েছে তখনই হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়াও অনেক সময় সিভিয়ার ভমিটিং নিয়ে আসে, সিভিয়ার হ্যাডএইক নিয়ে আসে, যদি সাডেন অকারেন্স হয়, আমরা স্ট্রোক মনে করি, তখন হসপিটালে যাব। এই ক্লিনিক্যাল ফিচারগুলো আমরা যদি পাই তখন আমরা বলি যে স্ট্রোক হয়েছে। স্ট্রোক সাধারণত আরও দুটি জিনিস বুঝি, সেটা হলো স্ট্রোক ইজ আ প্রিভেন্টেবল ডিজিজ অ্যান্ড স্ট্রোক ইজ আ ট্রিটাবল ডিজিজ। স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং স্ট্রোকের চিকিৎসা আছে। যথাসময়ে স্ট্রোকের চিকিৎসা করলে রোগী ভালো হয়।
প্রতিরোধের উপায়
সকাল বেলায় ব্যায়াম করতে হবে। হাঁটাহাঁটি করতে হবে, আমাদের ডায়াবেটিস থাকলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, ব্লাডপ্রেশার থাকলে ব্লাডপ্রেশার কন্ট্রোলে রাখতে হবে, ডিসথাইমিয়া থাকলে ডিসথাইমিয়া কন্ট্রোলে রাখতে হবে, ওবেসিটি থাকলে কমাতে হবে। ধুমপান বন্ধ করতে হবে। অ্যালকোহল, কোনো এডিকশন থাকলে, সাবসট্যান্স অ্যাবিউজ থাকলে ওগুলো বন্ধ করতে হবে। শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে, ফ্রেশ ফ্রুটস খেতে হবে, পরিমিতভাবে আহার করতে হবে। অ্যাংজাইটি, টেনশন, স্ট্রেস এগুলো কমাতে হবে। তাহলে স্ট্রোক আমরা প্রতিরোধ করতে পারবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।