জুমবাংলঅ ডেস্ক : দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর সুজালপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মুড়িয়ালা গ্রামের বাসিন্দা সোহেল ইসলাম (২৬) ঢাকার মেটলাইফ এলিকো নামে একটি বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতে গিয়ে ৫ আগস্ট ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ডিআইটি প্রজেক্ট থানার সামনে বিকেল ৫টায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
গুলি পিঠ দিয়ে ঢুকে পেট দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার কারণে পেটের ভেতর ৮টা নাড়িভুঁড়ি ছিদ্র হয়, যার ফলে পায়খানার রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আন্দোলনে উপস্থিত জনতা তাকে ধরাধরি করে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করান।
সেখানে ডা. ওমর আলীর তত্ত্বাবধানে তার প্রথম অপারেশন হয়। ডাক্তার বলেছেন, দ্বিতীয় অপারেশন করতে লাগবে আরো তিন লাখ টাকা। কিভাবে এত টাকা জোগাড় হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে তার পরিবার।
সোহেল ইসলাম জানান, গত ১৮ জুলাই থেকেই ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি অংশ নিই, ১৮ জুলাই পুলিশের ছোড়া গুলি বাঁ হাতে লেগে আহত হই।
তারপরও আন্দোলন থেকে পিছু হটিনি। ৫ আগস্ট আবারও গুলিবিদ্ধ হই। বাবার যেটুকু আবাদি জমি ছিল সবটুকু বন্ধক দিয়ে ছয় লাখ টাকা আর ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে ৫০ হাজার, বীরগঞ্জ থেকে ২৫ হাজারের মতো সহায়তা পেয়েছি। তা দিয়েই এ পর্যন্ত চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হয়েছে।
অপারেশনের মাধ্যমে ডা. পেট দিয়ে পায়খানার রাস্তা বের করে দেন, যেটা সরাসরি পাকস্থলীর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। যা খাই, ১০ মিনিটের মধ্যে বাথরুম বাইপাস কলস্টমিন ব্যাগে লিকুইড আকারে বের হয়ে যায়। ডাক্তার বলেছে, ঘা শুকালে আবার দ্বিতীয় অপারেশন করতে হবে, এ জন্য আরো তিন লাখ টাকা প্রয়োজন, এত টাকা কোথায় পাব। প্রথম অপারেশনে শুধু হাসপাতালেই মোট বিল আসে চার লাখ ১০ হাজার টাকার মতো টানা ৯ দিন সেখানে ভর্তি ছিলাম। এরপর ১৩ আগস্ট হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে আমি ও আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার বাড্ডা ভাড়া বাসায় উঠি। বর্তমানে এখানেই আছি।
ইনফেকশন হওয়ার কারণে এক দিন পর পর হাসপাতালে ড্রেসিং করাতে যেতে হয়। প্রতিবার খরচ হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মতো। ডা. বলেছে আরো ছয় মাস আমি কোনো কাজ করতে পারব না, এখন পর্যন্ত হাঁটতেও পারব না আর দ্বিতীয় অপারেশনের এত টাকা আমি কোথায় পাব তা নিয়ে আমি ও আমার পরিবার খুবই চিন্তিত।
তার বাবা আব্দুল মালেক (৬৪) জানান, আমি জুটমিলে কাজ করি, যা একটু আবাদি জমি ছিল তা দিয়েই কোনো রকমে সংসার চলত। ছেলের চিকিৎসার জন্য যেটুকু জমি ছিল, তা-ও বন্ধক দিয়ে টাকা দিয়েছি। বর্তমানে অর্থাভাবে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তহিদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সংগঠন ও গ্রামবাসী সবাই মিলে যতটুকু পেরেছি, সহায়তা করেছি। তারা খুবই অসহায় বর্তমানে চিকিৎসার জন্য আরো অর্থের দরকার। বিত্তবানদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।