জুমবাংলা ডেস্ক : আমের মৌসুম প্রায় শেষ। তবে অসময়ে গৌড়মতি জাতের আম চাষ করে মামা-ভাগ্নে চমক সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়। এই ব্যতিক্রমী চমকে অবাক হয়েছে এলাকাবাসী। মামা-ভাগ্নে আশা করছেন- এ মৌসুমে প্রায় ৪০ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবেন তারা।
বিভিন্ন জাতের আমের জোগান যখন শেষ হয়, ঠিক তখনই নতুন এক আমের আগমন ঘটে এই মৌসুমে। আর সেটি হলো সুস্বাদু রসালো গৌড়মতি আম। সাধারণ আমসহ উন্নত জাতের বিভিন্ন আম যখন প্রায় শেষ, ঠিক তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি।
রসালো আর সুস্বাদু নাবি জাতের এই আম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার দক্ষিণ বনগাঁও এলাকার মহব্বত আলী ও বুলবুল নামে দুই চাষি। শুধু স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নই দেখছেন না, এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এই দুই মামা-ভাগ্নে।
চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে মামা মহব্বত আলী ভাগ্নে বুলবুলকে সাথে নিয়ে ১ হাজার চারা রোপণ করে পরিচর্যা শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অসময়ে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলছে শতভাগ বিষমুক্ত রসালো ও সুস্বাদু গৌড়মতি আম। শতভাগ নিরাপদ রাখতে প্রতিটি আমে করা হয়েছে ব্যাগিং। মামা-ভাগ্নের হাতের নিবিড় ছোঁয়ায় দৃষ্টি কাড়ছে এলাকাবাসীসহ বাগান দেখতে আসা অনেক দর্শনার্থীদের। বাগান ঘুরে অনুমান করে দেখা গেছে, ১ হাজার গাছে আম এসেছে প্রায় সাড়ে ৪০০ মণ।
নাবি জাতের এই আম উপজেলায় ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর। এই আমের প্রতিটির ওজন ৬৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম। বর্তমানে এই গৌড়মতি আম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গৌড়মতি আমের সাফল্য দেখে অনেকেই এ বাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, বাংলার প্রাচীন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপদের নাম থেকে ‘গৌড়’ আর মূল্য বিবেচনায় রত্নের সাথে তুলনা করে ‘মতি’ শব্দের সমন্বয়ে ২০১৩ সালে নতুন জাতের এই আমের নামকরণ করা হয়েছিল ‘গৌড়মতি’। এ আম আকারে বড় হলেও এর আঁটি ছোট এবং আঁশ পাতলা।
কৃষক মহব্বত আলী বলেন, চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমিতে ১ হাজার গৌড়মতি আমের গাছ লাগিয়েছি। গত বছর থেকেই গাছে আম আসতে শুরু করেছে। গত বছর গাছের পরিপক্বতার কথা ভেবে গাছে আম নেয়া হয়নি। তবে এ বছর ব্যাপক ফলন হয়েছে। আশা করছি ৪০ লাখ টাকার বেশি আম বিক্রি করতে পারব। যত দিন যাবে গাছ আরো বড় হবে, আমের ফলনও বাড়বে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, এটি নাবি জাতের আম। সারাদেশের আমের জোগান যখন শেষ হয়, তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি। এই আম অত্যন্ত সুস্বাদু। আর যেহেতু সব আমের শেষে পাকে এই আম তাই দামও বেশ ভালো পান চাষিরা।
কোনো কৃষক যদি গৌড়মতি আমের বাগান করতে চায় তাহলে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা। সূত্র : ইউএনবি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।