জুমবাংলা ডেস্ক : সময়ের পরিবর্তন ও জলবায়ুর বড় ধরনের বিবর্তনে দেশে মিঠা পানির ৬৪ প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। তবে বিপন্ন প্রায় এসব প্রজাতির মাছ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জোগাড় করে সিনথেটিক হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন করছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন নদ-নদী থেকে বিপন্ন বা বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় স্বাদুপানির মাছ সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পুকুরে লালন-পালন করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সময়মতো স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে ইনজেকশনের মাধ্যমে সিনথেটিক হরমোন প্রয়োগ করে প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানো হয়।
তারপর হাঁপাতে ৮ ঘণ্টা রাখলে সেখানে তারা ডিম ছাড়ে। ডিমগুলো বোতল, জার বা হাঁপাতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা রাখার পর রেণু পোনা তৈরি হয়। দুদিন পর এসব রেণু পোনাকে নার্সারির পুকুরে ছাড়া হয়।
সৈয়দপুরের এই মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রে স্বাদু পানির বিপন্ন ও বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাঁচাতে এবং চাষের জন্য পোনার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হয়। এর মধ্যে ১১ প্রজাতির মাছ – যেমন: আঙ্গুস, কুর্শা, চিকুনিয়া, বালাচাটা, খলিশা, নাটুয়া, গুতুম, টাকি, টেংরা ও লইট্টা টেংরার প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে চলছে নারিকেল চেলা মাছের (বৈজ্ঞানিক নাম – সেলমোস্টা বেকাইলা) প্রজনন ও পোনা উৎপাদনের কাজ।
বৈজ্ঞানিকরা বলছেন, এটিও সফলভাবে শেষ করতে পেরেছেন তারা। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে নারিকেল চেলা মাছের পোনা বাজারজাত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
সৈয়দপুরের বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার ডা. আজহার আলী বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে আমরা এ প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তর জনপদের ছোট বিলুপ্ত প্রায় মাছগুলোকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই। ছোট মাছ ছাড়াও আমরা বিভিন্ন দেশীয় বড় মাছ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সফল হলে নদীর হারিয়ে যাওয়া এ মাছগুলো আবার আমরা ফিরে পাবো।’
সৈয়দপুরের এ স্বাদুপানি মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রটি ২০০৬ সালে ১০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে বর্তমানে ১৯টি পুকুর ও আধুনিক হ্যাচারি রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।