আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফের পৃথিবীর বুকে আঘাত হানল সৌরঝড়। আর তাতেই রঙিন হয়ে উঠল রাতের আকাশ। লাল, নীল, গোলাপি, বেগুনি আভায় উজ্জ্বল হয়ে উঠল চারিদিক।
সৌরঝড় পৃথিবীতে আঘাত হানার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার রাতের আকাশে দেখা যায় এই নর্দার্ন লাইটস। বাদ যায়নি এশিয়াও। হঠাৎ করেই ভারতের লাদাখের আকাশ লাল বর্ণ ধারণ করে।
ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে সেসব ছবি এবং ভিডিও। শনিবার (১১ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সূর্য থেকে নির্গত অভিযুক্ত কণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এলে মেরুজ্যোতি সৃষ্টি হয়। সাধারণত সৌরঝড় থেকে নির্গত ইলেকট্রন এবং প্রোটন পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র এবং বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এলে, বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরের গ্যাসের সঙ্গে ঘর্ষণ হয়, তা থেকেই আগুনের ফুলকির মতো আলোর ছটা তৈরি হয়। একই সময়ে এমন লাখ লাখ ফুলকি তৈরি হলে, তা মেরুজ্যোতির আকার ধারণ করে। মেরু-প্রদেশ এবং পৃথিবীর উঁচু জায়গা থেকে এই মেরুজ্যোতি দেখা যায়।
গত শুক্রবার (১০ মে) আবারও পৃথিবীতে আঘাত হানে সৌরঝড়। আর তার ফলেই গভীর রাতে উত্তর গোলার্ধের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের আকাশে মেরুজ্যোতির আশ্চর্য রূপ চোখে পড়ে। সৌরঝড়ের প্রভাবে পৃথিবীর বুকে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং টেলি কমিউনিকেশনে প্রভাব পড়তে পারে বলে সতর্কতা জারি হয়েছিল আগেই। তবে ততটাও তীব্র হয়ে নেমে আসেনি এই সৌরঝড়। ফলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।
ওই সৌরঝড় থেকেই রাতের আকাশে মেরুজ্যোতির রূপ চোখে পড়ে। রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানির মতো দেশের মানুষও এই মরুজ্যোতি দেখতে পান। ভারতের লাদাখের হানলের আকাশে রক্তিমবর্ণ মেরুজ্যোতি দেখা যায়। গভীর রাতে পৃথিবীর আকাশে দুই রকমের মেরুজ্যোতি চোখে পড়ে, মেরুজ্যোতি বোরিয়ালিস এবং মেরুজ্যোতি অস্ট্রেলিস। মেরুজ্যোতি বোরিয়ালিস দেখা যায় উত্তর মেরুতে। মেরুজ্যোতি অস্ট্রেলিস দক্ষিণ মেরু থেকে দেখা যায়।
অস্ট্রেলিয়ার আকাশে যে মেরুজ্যোতি দেখা গিয়েছে, তার রং ছিল উজ্জ্বল লাল এবং বেগুনি। তাসমানিয়ায় নৃত্যরত মেরুজ্যোতি চোখে পড়েছে। সপ্তাহান্তে আবারও মেরুজ্যোতি দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সূর্যের বুকে AR3664 নামের একটি গর্তের বিস্তার ক্রমশ বাড়ছে, তার জেরেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অভিযুক্ত সৌরকণা আছড়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই দশকের মধ্যে পৃথিবীতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড় এটি। এর কারণে স্যাটেলাইট ও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
স্যাটেলাইট অপারেটর, এয়ারলাইনস ও পাওয়ার গ্রিডকে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য ব্যাঘাতের জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।