লাইফস্টাইল ডেস্ক : সুখময় দাম্পত্য জীবন লাভে ইসলাম স্বামী ও স্ত্রী উভয়কে দায়িত্ব ও কর্তব্য দান করেছে, যা পালন করলে জীবন সুখময় হয়। কোরআন ও হাদিসের আলোকে এমন কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো।
স্বামীর করণীয় : ইসলাম স্ত্রীকে যেমন স্বামীর আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছে, তেমন স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছে স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করতে।
উত্তম আচরণ করা : স্ত্রীকে পছন্দ না হলেও তার সঙ্গে মাধুর্যপূর্ণ আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ কোরো, যদি তোমরা তাদের অপছন্দ করো তবে তোমরা হয়তো এমন বিষয় অপছন্দ করো আল্লাহ যাতে তোমাদের জন্য কল্যাণ রেখেছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৯)
স্ত্রীর ভালো দিকগুলো দেখা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘কোনো মুমিন পুরুষ (স্বামী) মুমিন নারীকে (স্ত্রী) চরমভাবে অপছন্দ করবে না। কেননা তার একটি অভ্যাস অপছন্দনীয় হলেও অন্য অভ্যাস পছন্দনীয় হতে পারে।’ (সহিহ মুসলিম)
স্ত্রীর চোখে ভালো হওয়ার চেষ্টা : ইসলাম ব্যক্তির ভালো বা মন্দ হওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোত্তম ব্যক্তি যে তার স্ত্রী-পরিবারের কাছে উত্তম।’ (সুনানে তিরমিজি)
স্ত্রীর করণীয় : দাম্পত্য জীবনের কলহ, বিবাদ ও সংকট নিরসনে ইসলাম স্ত্রীকে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। যেমন—
বৈধ কাজে স্বামীর আনুগত্য : ইসলাম বৈধ ও আইনানুগ কাজে স্বামীর আনুগত্য করার পরামর্শ দিয়েছে এবং এ আনুগত্যের পুরস্কারও ঘোষণা করেছে। উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে স্ত্রীর মৃত্যু হলো এমন অবস্থায় যে তার স্বামী তার ওপর সন্তুষ্ট সে জান্নাতে যাবে।’ (সুনানে তিরমিজি)
অনৈতিকতা পরিহার : আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন কোনো নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, রমজানের রোজা রাখবে, নিজের লজ্জাস্থান হেফাজত করবে, স্বামীর আনুগত্য করবে সে জান্নাতের যে দরজা দিয়ে খুশি প্রবেশ করতে পারবে।’ (মুসনাদে আবু ইয়ালা)
হাদিসবিশারদরা বলেন, এখানে লজ্জাস্থান হেফাজত দ্বারা সব ধরনের অনৈতিকতা ও অন্যায় প্রশ্রয় পরিহার করার কথা বলা হয়েছে। কেননা ছোট ছোট অন্যায় প্রশ্রয় পরবর্তী সময়ে বড় বড় পাপের কারণ হয়।
স্বামীর বৈধ প্রত্যাশা পূরণ : আবু উসামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহভীতির পর মুমিনের জন্য উত্তম স্ত্রী সর্বোত্তম প্রাপ্তি। যে স্ত্রীর বৈশিষ্ট্য হলো—স্বামী কোনো নির্দেশ দিলে সে তা মান্য করে, স্বামী তার দিকে তাকালে সে তাকে খুশি করে, যদি তার ওপর আস্থাশীল হয়ে স্বামী কোনো কসম করে তবে সে তা পূরণ করে এবং স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজের ব্যাপারে ও স্বামীর সম্পদের ব্যাপারে কল্যাণকামী (আমানতদার) হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ)
পুরুষের দায়িত্ব বেশি : দাম্পত্য জীবন সুখী ও সফল করতে নারী ও পুরুষ উভয়ের দায়িত্ব রয়েছে। তবে পুরুষের দায়িত্ব একটু বেশি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও দূরত্ব তৈরির ক্ষেত্রে স্বামীর দায়-দায়িত্ব স্ত্রীর চেয়ে বেশি। সে নিজের জেদ ও আমিত্ব বিসর্জন দিয়ে দূরত্ব ঘোচানোর উদ্যোগ নেবে। যদি তার ভুলের কারণে দূরত্ব তৈরি হয়, তবে সে নিজেকে সংশোধন করে নেবে এবং স্ত্রীর হৃদয় জয় করার চেষ্টা করবে। আর যদি স্ত্রীর ভুল থাকে, তবে কঠোর শাস্তি প্রদানের আগে পরিণাম-পরিণতি চিন্তা করবে, যেন সাজানো বাগান মরুভূমিতে পরিণত না হয়। কেননা সে পরিবারের প্রধান ও স্ত্রীর অভিভাবকও বটে।
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.