জুমবাংলা ডেস্ক : এক বছরের প্রাণবন্ত চেষ্টায় স্বউদ্যোগে সুন্দরবনের বাঘের কঙ্কাল তৈরি করলো করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি কোনো বিশেষজ্ঞ টিম ছাড়াই বাঘের কঙ্কাল তৈরির কাজ শুরু করে আজ রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সফলভাবে সেই কঙ্কাল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। গ্লাস দিয়ে ঘিরে রাখলে আগামী অর্ধশতাব্দীতেও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রকৃত কঙ্কালটি অক্ষত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কঙ্কালটি তৈরীর মূল কারিগর করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।
মুঠোফোনে তিনি জানান, বন বিভাগের বোটম্যান মোস্তাক আহমেদ, কুমির শেডের তত্ত্বাবধায়ক নিমাই রপদান ও করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আবুল হাসান এ কাজে সহযোগিতা করেন। মৃত কুমিরের হাড় দিয়ে কঙ্কাল তৈরি করা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার মৃত বাঘের হাড় ও বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে কঙ্কাল তৈরি করেছেন তারা। বাঘের কঙ্কাল তৈরির স্বপ্ন নিয়ে কাজ শুরু এক বছরের মাথায় এসে সফল হয়েছেন তারা।
তিনি আরও জানান, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চর এলাকায় বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যাওয়া একটি বাঘের হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ থেকে এই অবয়ব তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি কোনো বিশেষজ্ঞ টিম ছাড়াই বাঘের কঙ্কাল তৈরির কাজ শুরু করা হয়। গতকাল রবিবার সফলভাবে সেই কঙ্কাল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
বাঘের কঙ্কাল তৈরির জন্য তাদের সঙ্গে কোনো বিশেষজ্ঞ না থাকলেও নিজেদের আগ্রহ থেকে এটা তৈরি করেছেন বলে জানান তিনি। এর আগে করমজলে একটি কুমিরের কঙ্কাল তৈরি করা হয়েছিল, সেখানে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে থাকার সুযোগ হয়েছিল আজাদ কবিরের।
তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বাঘটির মরদেহ সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। তারপর আমরা কাজ শুরু করি। চামড়া ও হাড়কে দীর্ঘ স্থায়িত্ব করার জন্য ধাপে ধাপে নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আশা করি ভবিষ্যতে বাঘের এ চামড়া ও অবয়ব দর্শনার্থীদের জন্য করমজল ইন্টারপিটিশন ও ইনফরমেশন সেন্টারে রাখা হবে। এর মাধ্যমে দর্শনাথীরা সুন্দরবনের প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হবে।
তিনি আরও জানান, বাঘের মৃতদেহ আনার পর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হাড়গুলো সংরক্ষণ করা হয়। হাড়ের রঙ যাতে পরিবর্তন না হয় এবং পোকামাকড় নষ্ট না করে সেজন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে। হাড়ের ভেতরে থাকা অস্থিমজ্জা বের করা হয়েছে যাতে পোকার আক্রমণে রঙ নষ্ট না হয়। এভাবে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কঙ্কাল তৈরি করা হয়। অবশেষে এক বছরের চেষ্টায় সফল হয়েছি। এজন্য খুবই ভালো লাগছে। ১৫ থেকে ২০ বছর পূর্বে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কঙ্কাল তৈরি করা হয়েছিল, সেটা কারিগর করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে রয়েছে। তবে সেটার মান এতোটা ভালো নয়। এবারের প্রস্তুতকৃত কঙ্কালটিতে উন্নতমানের মেডিসিন ব্যবহার করা হয়েছে। গ্লাস দিয়ে ঘিরে রাখলে আগামী অর্ধ শতাব্দীতেও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রকৃত কঙ্কালটি অক্ষত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।