জুমবাংলা ডেস্ক : বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের খালে অবমুক্ত করা হয়েছে মহাবিপন্ন প্রজাতির ১২টি ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপ। গত বুধবার বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ছেদনখালী খালের চরে স্যাটেলাইট লাগানো এসব কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। কচ্ছপ অবমুক্ত করার সময় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার, অষ্টিয়ার ভিয়েনা জু’এর কিউরেটর টনিসহ বন বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ১০টি ও ভারত থেকে চলে আসা খুলনা-পটুয়াখালী থেকে উদ্ধার করা ২টি ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপসহ মোট ১২ কচ্ছপ সুন্দরবনের ছেদনখালী খালের চরে অবমুক্ত করা হয়েছে। কচ্ছপগুলোর পিঠে স্যাটেলাইট লাগানো রয়েছে। তাদের গতিবিধি আমরা পর্যবেক্ষন করতে পারব। এর মাধ্যমে এসব কচ্ছপের আচার-আচরণ ও জীবন সম্পর্কে আরও স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, একটা সময় ছিলো যখন সুন্দরবনের এ ধরনের ঈষৎ লবনযুক্ত পানির কচ্ছপ ছিলো। বর্তমানে এ ধরনের কচ্ছপ আর দেখা যায় না। সুন্দরবনের কোথাও এ ধরনের কচ্ছপ আছে কি না, তা খুঁজতে ও কচ্ছপের চলাফেরা জানার জন্য এ ১২টি কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে।
উলেখ, ২০০০ সালের দিকে বন্যপ্রাণী গবেষকরা মনে করেন পৃথিবীতে আর বাটাগুর বাসকার কোন অস্তিত্ব নেই। পরে ২০০৮ সালে গবেষকরা প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা আছে কিনা তা খুঁজতে শুরু করেন।
খুঁজতে খুঁজতে নোয়াখালি ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী। প্রজননের জন্য গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয় কচ্ছপগুলোকে। বনবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকেরা নিবিড়ভাবে লালন পালন ও প্রজননের চেষ্টা করে বাটাগুর বাসকা গুলোকে। তারপরও তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি। তবে কয়েক বছরে গাজিপুরে প্রায় ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল ৮টি মা কচ্ছপ। সেখানে ভাল সাড়া পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেয়া ৯৪টি ছানাসহ করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে দু’টি কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা হয়।
২০১৮ সালে দু’টি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০২০ সালে ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা পাওয়া যায়। এসব বাচ্চা থেকে ২০১৭ সালে ২টি, ২০১৮ সালে ৫টি, ২০১৯ সালে ৫টি কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করে বন বিভাগ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১০টি কচ্ছপ সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।