Sunk Cost Fallacy সম্পর্কে অনেকেই ঠিক মতো জানে না। আমরা অনেক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে উভয় সংকটে পড়ি। দুটি অপশনের মধ্যে একটি চয়েস করার দরকার হলে আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকি। মাঝেমধ্যে আমরা ভুলক্রমে এমন সিদ্ধান্ত নেই যা আমাদের উভয় দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।
একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যাক। ধরুন আপনি ভ্রমণে ইতালি যাওয়ার জন্য টিকিট কাটলেন। আগামীকাল আপনার ফ্লাইট। আজ আপনি হঠাৎ করে অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে গেলেন। এখন আপনি কি সিদ্ধান্ত নিবেন?
আপনার হাতে দুইটি অপশন রয়েছে। যদি আপনি অসুস্থ শরীর নিয়ে ইতালিতে ঘুরতে চান তাহলে আপনি উপভোগ করতে পারবেন না। আপনার শরীর ও মন সায় দিবে না। হয়তো আপনি বেশি সময় নিয়ে ঘোরার এনার্জি পাবেন না।
অন্যদিকে যদি আপনি অসুস্থতার কথা ভেবে না যান তাহলে আর্থিক ক্ষতি মেনে নিতে হবে। কেননা আপনি অলরেডি ইতালিতে যাওয়ার জন্য টিকেট কেটে ফেলেছেন। ওই টিকিটের টাকা আপনার আর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আপনি না যাওয়ার পেছনে এই যুক্তি দিতে পারেন যে, আপনার কাছে সুস্থতা সবার আগে। টিকিটের টাকা নষ্ট হয়ে গেলেও কিছু করার নেই। আপনি যদি ভুলক্রমে এখানে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেন যে উভয়ে দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত থাকবেন তাহলে এটাকে সাঙ্ক কস্ট ফ্যালাসি বলা যেতে পারে।
ধরুন আপনি একটি সিনেমা দেখতে বসলেন। ৪০ মিনিট পর্যন্ত দেখলেন কিন্তু আপনি একদম উপভোগ করছেন না। এরপরেও আপনি সিনেমাটির শেষ পর্যন্ত দেখতে চান। তার মানে আপনি আগে যে সময় দিলেন সেটা লস এবং পরবর্তী সময়ে আরও দেখলে সেটাও লস হিসেবে গণ্য হবে। তবু আপনি সিনেমাটির শেষ পর্যন্ত দেখবেন।
অর্থাৎ আমরা অতীতের নানা দিক চিন্তা করে ক্ষতিগ্রস্ত হই। তা সত্বেও ওই বিষয় নিয়ে পড়ে থাকি। Sunk Cost Fallacy থেকে বের হয়ে আসার জন্য আপনাকে যা করতে হবেঃ
১. প্রথম ধাপ হচ্ছে আপনাকে বুঝতে হবে আসলেই আপনি এ ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। এটি আপনার ডিসিশন মেকিং এ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
২. আপনি যদি বুঝতে পারেন ভবিষ্যৎ এ আপনি সময় এবং অর্থ সবদিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাহলে ওই কাজ থেকে বেরিয়ে আসুন।
৩. ঠান্ডা মাথায় আপনার নির্দিষ্ট কাজের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবুন। বর্তমানে যে পদ্ধতি অনুসরণ করে কাজ করছেন তা আদৌ কোন ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে কিনা তা নিশ্চিত হোন।
৪. নিরপেক্ষ জায়গা থেকে বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন এবং ’Benefit and Cost’ এর বিষয়টি ভেবে দেখুন। প্রয়োজনে ভিন্ন এপ্রোচে এগোতে হবে।
৫. আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না। ফ্যাক্ট চিন্তা করুন এবং যুক্তি দিয়ে ভাবুন। এরপর ঠান্ডা মাথায় ফাইনাল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
৬. একটি সমস্যা সমাধান করার একাধিক উপায় ভেবে রাখুন। এমন একটি উপায় খুঁজে বের করুন যা আপনার উদ্দেশ্য শতভাগ পরিপূর্ণ করবে।
৭. অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করুন। এমন কারো কাছে যেতে পারেন যিনি আপনার সমস্যা অনুধাবন করে নিরপেক্ষ জায়গা থেকে সমাধান খুঁজে বের করে দিতে পারবে।
৮. অতীতে ইতিবাচক বা নেতিবাচক যা কিছু করেছেন তা একবার ঠান্ডা মাথায় ভাবুন এবং ভুল হয়ে থাকলে তা থেকে শিক্ষা নিন। অতীত নিয়ে পড়ে না থেকে ভবিষ্যৎ এর কথা ভেবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে নিতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।