জুমবাংলা ডেস্ক : সুন্নতে খতনা করতে গিয়ে রাজধানীর মালিবাগের জেএস হাসপাতালে শিশু আহনাফ তাহমিদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় শিশুটির বাবা ফখরুল আলম বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আওলাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনার পরই গত রাতে হাসপাতাল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদিরসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫ জন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শিশুটির বাবা ফখরুল আলম। এরপর মামলার প্রেক্ষিতে ওই দু’জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে, ঘটনার পরই ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে উধাও হয়ে যান অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মুক্তাদির। তার খোঁজ করা হচ্ছে। আর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলেও থানা থেকে জানানো হয়েছে।
স্বজনরা জানিয়েছেন, শিশু আহনাফ তাহমিদ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। গতকাল মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর ১০ বছর বয়সী ছেলে আহনাফ তাহমিদকে সুন্নতে খতনা করতে নিয়ে আসেন বাবা ফখরুল আলম।
পরিবারের অভিযোগ, আসার পরই হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদিরদের নেতৃত্বে তাহমিদকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় হাসপাতালে দায়িত্বরত ডা. মাহাবুব এবং ডা. ইশতিয়াক আজাদ।
এর ঠিক ২০ মিনিট পর আহনাফকে দেখতে চায় পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে শুরু হয় হট্টগোল। এরপরই তাকে মৃত ঘোষণা করে তারা।
রাজধানী মালিবাগের জেএস হাসপাতাল। যেখানে অতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগে শিশু তাহমিদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া
পরিবার বলছে, প্রথমে লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া প্রয়োগ করার কথা থাকলেও দেয়া হয় জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়া। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলেও বমি করে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় তাহমিদ।
স্বজনরা বলছেন, তাহমিদ হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এসেছে। এরপর সাড়ে ৮টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। ৯টার পর সে মারা যায়।
এমন ঘটনার পরও দায় এড়াতে ব্যস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়া দেয়া হয়নি জানিয়ে তাদের দাবি, আগে থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল তাহমিদের। সে ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সঠিক তথ্য না দেয়াতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির দাবি করেন, ছেলেটির ওজন বেশি ছিল। বয়সও ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। ফুসফুসে সমস্যা ছিল। কিন্তু সব তথ্য পরিবার জানায়নি।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি আয়ান নামে এক শিশুর সুন্নতে খতনা করতে গিয়ে মৃত্যু হয়। ৩১ ডিসেম্বর খতনার জন্য আয়ানকে বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেস্থেশিয়া দেয়া হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আয়ানের বাবা-মায়ের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে সুন্নতে খতনার সময় অতিরিক্ত অ্যানেস্থেশিয়া দেয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।