সুপার টাইফুন রাগাসা হারিকেনের শক্তি নিয়ে ও প্রবল বৃষ্টিসহ হংকংয়ে আঘাত হেনেছে। চলতি বছরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এই টাইফুনের প্রভাবে তাইওয়ানে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তাইওয়ানের দমকল পরিষেবা জানিয়েছে, রাগাসা তাণ্ডব চালানোর সময় ভারি বৃষ্টির মধ্যে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় হোয়ালিয়েন কাউন্টিতে একটি কৃত্রিম হ্রদের পানি উপচে পড়ে, এতে পানির বিশাল একটি ধারা হোয়ালিয়েন শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। পর্বতের ওপর থেকে নেমে আসা এই হড়কা বানে ১৪ জনের মৃত্যু ও ১২৪ জন নিখোঁজ হয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার থেকে রাগাসার একটি পাশ তাইওয়ানে আঘাত হানতে শুরু করে, এর প্রভাবে দ্বীপটিতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে।
হংকংয়ের কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়ার পর রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। উত্তাল ঢেউ এশিয়ার আর্থিক কেন্দ্রটির পূর্বাংশের ও দক্ষিণাংশের তটরেখায় আছড়ে পড়তে থাকে, এতে কিছু রাস্তার পাশাপাশি ঘরবাড়িও ডুবে যায়।
সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে হংকংয়ের উপকূলীয় দ্বীপগুলোর সৈকত ও গাছপালা ডুবে যায়। হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যে দ্বীপে সেই ল্যান্ডাউও এগুলোর মধ্যে আছে।
রাগাসার মূল কেন্দ্রটি এখন হংকং থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে আছে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২০০ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ঘনবসতিপূর্ণ নগরীটির সবচেয়ে কাছে থাকাবে টাইফুনটি ।
ধারণা করা হচ্ছে, হংকং পার হয়ে এটি সুপার টাইফুনের তীব্রতা বজায় রেখেই চীনের সাড়ে ১২ কোটি জনসংখ্যার প্রদেশ গুয়াংডংয়ের উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে, সেখানে স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে এটি স্থলে উঠতে শুরু করবে।
তাইওয়ানে সোমবার থেকে আঘাত হানা শুরু করলেও সেখানে রাগাসার মূল প্রভাব দৃশ্যমান হয়েছে মঙ্গলবার। সোমবার সুপার টাইফুনটি ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যায়।
এই ঝড়ের কারণে দোকানপাট দুই দিন বন্ধ থাকতে পারে আশঙ্কায় বাসিন্দারা হংকংয়ের সুপারমার্কেটগুলোতে ভিড় করে। তারা প্রায় দোকান শূণ্য করে পণ্য নিয়ে বাড়ি ফেরে। টাইফুন এগিয়ে আসার সময়টিতে তারা ঘরবাড়ির জানাগুলোতে চওড়া টেপ লাগিয়ে দেয়। ঝড়ের তাণ্ডবে জানালার কাঁচ ভেঙে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এ ব্যবস্থা।
বুধবার ভোররাতে হংকং রাগাসার কারণে সর্বোচ্চ সতর্কতা জানিয়ে ১০ নম্বর সংকেত জারি করে। এই নির্দেশনায় সব ধরনের পরিবহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঝড়বৃষ্টির জন্য অ্যাম্বার সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই শহরের কিছু রাস্তা আংশিক তলিয়ে গেছে।
কর্তৃপক্ষ ফুঁসে ওঠা সাগরের বিষয়ে সতর্ক করে দুপুরের দিকে পানির স্তর সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে। এ সময় সর্বোচ্চ চার মিটার (১৩ ফুট) উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে হংকংয়ের আবহাওয়া মানমন্দির জানিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।