বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : বিশ্বের সুবিখ্যাত মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানিগুলোর মধ্যে সুজুকি অন্যতম একটি। পুরো বিশ্বে তারা তাদের ম্যানুফ্যাকচার করা বাইকগুলোর জন্য যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। এর পেছনে মূল কারণ হলো, সুজুকি সব সময় রাইডারদের সাধ্যের মধ্যে সব সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করে।

সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশনও এর ব্যতিক্রম নয়। কম বাজেটে ওমন প্রিমিয়াম লুক এবং ফিচারের কারণেই মূলত সুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এতো জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সুজুকির ১৫০ সিসির এই বাইকে দেওয়া হয়েছে একটি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪-স্ট্রোক, এয়ার কুল্ড কার্ব্যুরেটেড ইঞ্জিন। স্মুথ ট্রান্সমিশনের জন্য এতে রয়েছে ৫-স্পিড গিয়ারবক্স এবং ওয়েট-মাল্টিপ্লেট ক্লাচ।
বাইকটির ১২ লিটারের ফুয়েল ট্যাংকটি এর বডি ডিজাইনের সাথে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে সেট করা হয়েছে। এতে বাইকটি যেমন স্টাইলিশ দেখায় ঠিক তেমন লং ট্যুরের জন্য একে উপযোগী করে তোলে।
বাইকটির হেডলাইট এবং টেইল লাইট হ্যালোজেন এবং ইন্ডিকেটরটি এলইডি। এই লাইট সেটাআপটি আরেকটু আপগ্রেটেড করলে ভালো হতো।
সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন এই সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের তুলনায় লাইট ওয়েটের হওয়ায় শহরের রাস্তায় সহজেই এটি রাইড করা যাবে তবে সিট হাইট কিছুটা বেশি তাই শর্ট হাইটের রাইডারদের কাছে এটি কন্ট্রোল করা কিছুটা কঠিন হতে পারে।
এছাড়া এই বাইকের ইন্সট্রুমেন্ট প্যানেলটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল এবং এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬০ মিমি। বাইকটি বর্তমানে চারটি আকর্ষণীয় রঙে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এই দুটি কালার হলো, মেটালিক ট্রিটন ব্লু, গ্লাস স্পার্কল ব্ল্যাক, পার্ল রেড এবং হোয়াইট।
এই ছিলো সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন ফিচার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন রিভিউ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যাথেই থাকুন।
Suzuki Gixxer Double Disc Edition রিভিউ -বাইকটির বিস্তারিত বিবরণ
সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন রিভিউ-এর নিচের অংশে এই বাইকের প্রতিটি অংশ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি যেনো আপনারা সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন ফিচার, স্পেসিফিকেশন এবং বাইকটি কাদের জন্য ভালো ইত্যাদি সঠিকভাবে জানতে পারেন।
বডি ডিজাইন
সুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশনের এই বাইকের মূল আকর্ষণ হলো এর দুর্দান্ত স্টাইলিশ লুক।বাইক পছন্দ করার ক্ষেত্রে ইয়াং জেনারেশনের কাছে যা একটি মুখ্য বিষয়।
রাইডিং কমফোর্টের জন্য এতে দেওয়া হয়েছে পাইপ হ্যন্ডেলবার এবং ডিজিটাল ইন্সটুমেন্ট ক্লাস্টার। যেখানে রাইডার দরকারি সব তথ্য দেখতে পারবেন। এই বাইকের ফুয়েল ট্যাঙ্কটি আগের এডিশনের তুলনায় বেশ বড়, যার ধারণ ক্ষমতা ১২ লিটার।
এই বাইকের সামনের লুকটি আগের এডিশনের থেকে স্টাইলিশ এবং অ্যাগ্রেসিভ। বাইকটির ডুয়েল পোর্ট এক্সস্টটির কারণে এটি এজি ডিজাইন পেয়েছে। এই নতুন ডাবল ডিস্ক এডিশন অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং নজরকাড়া ডিজাইনের হওয়ায় এটি যে কোনো মানুষের মন জয় করতে পারবে।
বাইকটির ওভারঅল বডির দৈর্ঘ্য ২০৫০ মিমি, প্রস্থ ৭৮৫ মিমি, উচ্চতা ১০৩০ মিমি। বাইকটির হুইলবেইজ ১৩৩০ মিমি এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬০ মিমি। বাইকটির সিট হাইট ৭৯০ মিমি।
বাইকের সামনে রয়েছে হ্যালোজেন হেডলাইট যার পারফর্ম্যান্স খুব একটা সন্তোষজনক নয়। তাই রাতে এই লাইটের সাথে রাইডিং খুব একটা সুবিধার নাও হতে পারে। বাইকটির ওভারঅল বডির ওজন ১৩৫ কেজি, অর্থাৎ বাইকটি যথেষ্ট হালকা।
যেহেতু সুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশনটিকে একটি নেকেড স্পোর্টস লুক দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তাই এর সিটিং স্টাইলটাও কিছুটা স্পোর্টি বাইকগুলোর মতোই। এতে রয়েছে একটি সিঙ্গেল সিট এবং এর ফুড পেগটিও কিছুটা স্পোর্টি স্টাইলে যুক্ত করা।
ইঞ্জিন
শুধু বডি ডিজাইন নয় সুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন, এই বাইকের ইঞ্জিন পারফর্ম্যান্সও দুর্দান্ত। এই বাইকে রয়েছে একটি ১৫০ সিসির এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন, যেটি ৪ স্ট্রোক, ২ ভাল্ভ এবং সিঙ্গেল সিলিন্ডার বিশিষ্ট। ইঞ্জিনটিতে রয়েছে ফুয়েল ইঞ্জেকশন সিস্টেম যা ৮০০০ আরপিএম এ ১৪.৬ বিএইচপি ম্যাক্স পাওয়ার উৎপন্ন করতে সক্ষম এবং.৬০০০ আরপিএম এ ১৪ নিউটন মিটার ম্যাক্স টর্ক উৎপন্ন করতে পারে।
এই বাইকের ইঞ্জিন বেশ রিফাইন্ড এবং বাইকটির বোর এবং স্ট্রোক যথাক্রমে ৫৬ মিমি এবং ৬২.৯ মিমি।
বাইকটি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিমি টপ স্পিড দিতে সক্ষম এবং প্রতি লিটার ফুয়েলে প্রায় ৪০ কিমি মাইলেজ দিতে পারে। সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন দাম হিসেবে এমন মাইলেজ এবং টপ স্পিড অনেক রাইডারেরই পছন্দের কারণ।
এছাড়াও বাইকটিতে ওয়েট মাল্টি-প্লেট ক্লাচ সিস্টেম এবং একটি ৫-স্পিড গিয়ারবক্স সংযুক্ত রয়েছে।
ব্রেক ও টায়ার
সুজুকি জিক্সরের এই এডিশনে ব্যবহার করা হয়েছে ডাবল ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম। যা সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন ফিচার-এর সাথে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। বাইকটির সামনের চাকায় সংযুক্ত করা হয়েছে ২৬৬ মিমি এর ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনের চাকায় সংযুক্ত করা হয়েছে ২৪০ মিমি এর ডিস্ক ব্রেক।
সুজুকি জিক্সরের এই এডিশনের টায়ারগুলো তুলনামূলকভাবে এই সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের থেকে চিকন বলা চলে। বাইকটির সামনের দিকে ১০০/৮০-১৭ সাইজের টায়ার এবং পেছনের দিকে ১৪০/৬০- আর ১৭ সাইজের টায়ার সংযুক্ত করা হয়েছে। উভয়ই অ্যালয় হুইল সহ টিউবলেস টায়ার।
সাসপেনশন
সুজুকি ব্র্যান্ডের এই বাইকটির সামনের দিকে রয়েছে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন এবং পেছনের দিকে রয়েছে সুইং আর্ম মোনো সাসপেনশন। এই সাসপেনশনের ফিডব্যাক বেশ ভালো যার ফলে ভাঙ্গা রাস্তায় স্বাছন্দ্যে চালানো যায়।
সুুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক এডিশন রিভিউ -এর এই পর্যায়ে আমরা এই বাইক কাদের জন্য ভালো হবে সে সম্পর্কে জেনে নিবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



