সুয়েব রানা, সিলেট : সিলেটের জৈন্তাপুরে চলতি মৌসুমে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ছাড়া গত বছরের তুলনায় এ মৌসুমে শিমের বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। এসব শিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সিলেটের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হচ্ছে। এর ফলে একদিকে শিম চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে, অন্যদিকে তাদের আর্থিক সচ্ছলতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলাজুড়ে ৩৫০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে কার্তিকা জাতের শিমের আবাদ হয়েছে ১৯০ হেক্টর, আশ্বিনা জাতের শিমের আবাদ হয়েছে ১১০ হেক্টর, ঈপসা জাতের শিমের আবাদ হয়েছে ৩০ হেক্টর ও অন্যান্য জাতের শিমের আবাদ হয়েছে ২০ হেক্টর।
শিমচাষিরা জানান, মাটি ও আবহাওয়া এ বছর শিম চাষের জন্য অনুকূলে ছিল। ফলে শিমের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকদের বিস্তীর্ণ খেতজুড়ে শিমের সমারোহ চোখে পড়ছে। শিম সংগ্রহ ও বাজারজাত করতে তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। কুয়াশা যত বৃদ্ধি পাবে, ফলন ততই বাড়বে বলে জানান চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মোয়াখাই মুক্তাপুর, লামনী গ্রাম উত্তর পার, পাখিবিল, কামরাঙ্গী, কালিঞ্জি, বাইরাখেল, রুপচেং, হর্ণি, লালাখাল গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শিমের ক্ষেত। এখানকার সহস্রাধিক চাষী শিম চাষ করেছেন। খেত থেকে শিম তোলার কাজ চলছে পুরোদমে।
২ নং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের লামনী গ্রামের চাষী মোহাম্মদ রায়হান আহমদ জানান, তিনি প্রতিবছর শিম চাষ করেন। এ বছর ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ করে ১৬৫ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমে শিম বিক্রি তার ৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে ধারণা করছেন।
একই এলাকার সবজি চাষি মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘উপজেলার মধ্যে মুক্তাপুর ইউনিয়ন সবজি উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। এই গ্রামে প্রতিবছর সব ধরনের সবজি আবাদের পাশাপাশি শিমের আবাদ হয়। শীতের মৌসুমে এখানকার অনেক কৃষক শিম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর ফলে তারা আর্থিকভাবে অনেক সচ্ছল হয়ে উঠছেন।’
একই উপজেলার কালিঞ্জি গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকার বিভিন্ন জায়গায় উৎপাদিত শিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে সিলেট জেলার বিভিন্ন আড়তে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি বাজারে ও আড়তে শিম ভালো মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন।’
উপজেলার সকল কৃষকরা বলেন গত বছরের তুলনায় এ বছর শিমের বাজারদর অনেক ভালো। গত বছর এই সময় প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু এ বছর মৌসুমের শুরুতেই দাম উঠেছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। এর ফলে কৃষকরা উৎপাদন খরচ মিটিয়ে অধিক লাভে শিম বিক্রি করতে পারছেন।’
উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা আক্তার দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠের সাংবাদিক সুয়েব রানা কে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে পুরো উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মোট ৩৫০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শুরু থেকে শিমের উৎপাদন ভালো হয়েছে। অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর শিমের বাজারদর বেশি হওয়ায় কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন।
খেতের রোগবালাই দমন ও উৎপাদন বৃদ্ধি করতে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষে থেকে বিভিন্ন ব্লকে উপসহকারী কৃষি অফিসার-রা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ফসলের যাবতীয় সকল কিছুর পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।