জুমবাংলা ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের দায়ে সিলেটের আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ইসলামি বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে আদালতে ১৫ জনের নামে এ মামলা দায়ের করেন তিনি।
তাহেরীর নিযুক্ত আইনজীবী সাইফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ইসলামি বক্তা তাহেরীর বিরুদ্ধে সিলেটের বালাগঞ্জে একটি মাহফিলে অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকা নিয়ে আসার অভিযোগ তোলা হয়। তাহেরী ওয়াজ মাহফিলে বক্তৃতা করবেন, এ বিষয়ে আয়োজক কমিটি এলাকায় মাইকিং করেছিলেন। ওয়াজ মাহফিলে না আসায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে আশ্রাব গালিগালাজ করা হয়।
তাহেরী জানান, ঐ মাহফিল সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তাকে না জানিয়েই মাহফিলের পোস্টার তার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। পোস্টারে নাম দিয়ে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে তার মানহানি করা হয়েছে। তাই জড়িতদের নামে তিনি মামলা দায়ের করেছেন।
এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী সাংবাদিকদের বলেন, সিলেটের বালাগঞ্জের মাহফিলের আমি কোনো দাওয়াত পাইনি। আমি জানিও না কে বা কারা টাকা নিয়েছে। অথচ আমার নামে মিথ্যাচার করা হয়েছে। তাই আদালতে মামলা দায়ের করতে এসেছি।
তিনি বলেন, ফেসবুক লাইভে আমাকে আশ্রাব গালিগালাজ করা হয়েছে। টাকা নেয়ার অপবাদ দিয়ে মাহফিলে না আসার বদনাম রটানো হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে মামলা দায়ের করেছি। আদালত আমার আবেদনটি আমলে নিয়েছেন।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ সাংবাদিকদের বলেন, তাহেরী আদালতে ১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। আগামী ৩১ মার্চ মামলার আদেশের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
অভিযোগের বিষয়বস্তু তুলে ধরে তিনি বলেন, কোনো যোগাযোগ না করে একটি চক্র তাহেরীর নাম ভাঙিয়ে এপিএস পরিচয়ে প্রতারণা ৩৩ হাজার টাকা নেয়। ওয়াজের দিন তাহেরীর উপস্থিতি না দেখে মানুষ ক্ষেপে যায়। অথচ কোনো যোগাযোগই করা হয়নি। এরপর তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গালিগালাজ করা হয়। এসব কারণে তিনি মামলা দায়ের করেন।
তাহেরী অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকা নিয়ে সিলেটের বালাগঞ্জে একটি ওয়াজ মাহফিলে আসেননি। গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ) এমন অভিযোগ ওঠে। এদিন বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মাঠে এ মাহফিলের আয়োজন করেন স্থানীয়রা।
আয়োজক কমিটির সংশ্লিষ্টরা বলেন, ওয়াজ মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলেন তাহেরী। বিকেলে বালাগঞ্জের পৈলেনপুর এসে ওয়াজ করার কথা ছিল তাহেরীর। মাহফিলে আসা বাবদ তার এপিএসর কাছে দুই ধাপে অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকাও দিয়েছে আয়োজক কমিটি। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাহেরীর পিএসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা মোবাইলের নম্বরে বার বার ফোনকল দিলে কেউ রিসিভ করেননি। ওয়াজের নির্ধারিত সময় পর্যন্তও কেউ ফোনকল রিসিভ করেননি।
একপর্যায়ে টাকা নিয়ে তাহেরীর না আসার অভিযোগটি আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মাহফিলের মাইকে জানিয়ে ওয়াজ শুনতে আসা মুসল্লিদের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। এ সময় এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা তাহেরীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এরপর আয়োজক কমিটি তাহেরীকে পুরো সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। ধারণকৃত এমন কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি তাহেরীর নজরে এলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার কোনো এপিএস নেই। যে বা যারা তার এপিএস পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।