জুমবাংলা ডেস্ক : ভিন্ন পেশার তিনজন উদ্যোক্তার হাত ধরে নেত্রকোনার বারহাট্টায় একটু একটু করে এগিয়ে চলছিল মসজিদটির নির্মাণকাজ। মসজিদটি ছিল টিনশেড ঘরে নড়বড়ে। স্থানীয় মুসল্লিদের দুরবস্থার কথা চিন্তা করে মসজিদ পুনর্নির্মাণকাজ শুরু করেন তারা। কিন্তু আর্থিক সংকট এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় মসজিদটির নির্মাণকাজ।
নির্মাণকাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মসজিদে নামাজ আদায় নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন মুসল্লিরা। নির্মাণকাজ শেষ করতে না পারায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন উদ্যোক্তারাও।
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের উত্তরপাড়া জামে মসজিদটি ২৯ বছরের পুরাতন। এখানে শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। তাদের বেশিরভাগই কৃষক ও খেটে-খাওয়া মানুষ।
মসজিদটি প্রতিষ্ঠালগ্নে একটি কুঁড়েঘর ছিল। পরে বিভিন্নজনের উদ্যোগে মসজিদে ঢেউটিন লাগানো হয়। পুরাতন ঢেউটিনের ছিদ্র দিয়ে মসজিদের ভেতরে বৃষ্টির পানি পড়তো। এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নামাজ পড়তে এসে নানারকম প্রতিকূলতার মুখে পড়তেন মুসল্লিরা। পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য ২০১৯ সালের অক্টোবরে গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা সেনাসদস্য রাসেল আরাফাত, বিদ্যালয় শিক্ষক জুয়েল মিয়া ও গণমাধ্যম কর্মী কামাল হোসাইন উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেন।
কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে বেশিদূর এগুতে পারেননি তারা। ভেতরের ফ্লোর, সিলিং, বারান্দার ওয়াল, বাথরুমসহ কিছু কাজের জন্য রমজান মাসে নামাজ পড়তে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। নির্মাণাধীন মসজিদটির ফ্লোর সম্পূর্ণ না হওয়ায় নামাজ আদায়ও সম্ভব হচ্ছে না।
মসজিদের মুসল্লি ও প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টে কর্মরত সেনা সদস্য রাসেল আরাফাত বলেন, কাজটি শেষ করতে না পেরে অপরাধবোধ কাজ করছে। কাজ শুরু করে চার বছরেও শেষ করতে পারলাম না। এখন মুসল্লিরা মসজিদে এসে নামাজ আদায় করতে পারছেন না।
মসজিদটির নির্মাণ-উদ্যোক্তা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি গণমাধ্যম কর্মী কামাল হোসাইন বলেন, অনেক চেষ্টার পর টেনেটুনে অনেকটা কাজ শেষ করতে পেরেছি। কিন্তু বাকি কাজ এখন আর এগিয়ে নিতে পারছি না। মসজিদের পুরো কাজ শেষ করতে হলে আরো পাঁচ লাখ টাকার মতো প্রয়োজন। ভেবে পাচ্ছি না কিভাবে কী করবো?
গ্রামের বাসিন্দা মুসল্লি কৃষক সিদ্দিকুর রহমান ও রমজান আলী বলেন, নির্মাণকাজ শেষ না হলে মসজিদে এসে আর নামাজ আদায় হবে না। ফ্লোর উঁচু নিচু, টাইলস কিংবা ফ্লোর না হলে নামাজ পড়তে কষ্ট হচ্ছে। আল্লাহ জানেন কবে টাকা-পয়সা জোগাড় হয়ে নির্মাণকাজ শেষ হবে। আমরা গ্রামের খেটে-খাওয়া গরিব মানুষ। বড় অংকের টাকা দিয়ে সাহায্য করার সামর্থ্য আমাদের নেই। তাই নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ের সুযোগ হবে কিনা জানি না।
এ বিষয়ে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাঈনুল হক কাশেম বলেন, মসজিদটির জন্য এলজিইডির মাধ্যমে একটি প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল। করোনার কারণে তা আটকে আছে।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন, সহযোগিতার জন্য নির্ধারিত নিয়মে আবেদন করলে আমরা তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।