জুমবাংলা ডেস্ক : সঞ্চয়ের জন্য মানুষ ভরসা করে ব্যাংকের ওপর। তবে সবার জানা থাকে না কোন ব্যাংক কী মুনাফা দেয়। কষ্টার্জিত অর্থ কোন ব্যাংকে রাখলে একটু বেশি মুনাফা মিলবে তার খোঁজে থাকেন সঞ্চয়কারীরা। বর্তমানে কোথায় সঞ্চয় করবেন বা কী পরিমাণ মুনাফা পাবেন জেনে নিন।
প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রাখা যায় মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প বা ডিপিএসে (ডিপোজিট পেনশন স্কিম)। ডিপিএস নামে বহুল প্রচলিত হলেও বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে এর ভিন্ন ভিন্ন নাম। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ডিপিএসের বিপরীতে গ্রাহককে মাসিক, ত্রৈমাসিক, ছয় মাসিক ও বাৎসরিক সুদ দিয়ে থাকে।
এছাড়া সর্বনিম্ন তিনমাস থেকে তিন বছর বা তারও বেশি সময়ের জন্য ব্যাংকগুলোতে সঞ্চয় করার সুযোগ রয়েছে। এসব সঞ্চয়ের বিপরীতে ব্যাংক যে সুদ দেয়, তার নাম ফিক্সড ডিপোজিট রেট বা স্থায়ী আমানতে সুদের হার (এফডিআর)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বিদ্যমান ৬১টি ব্যাংকের সুদের হার ভিন্ন ভিন্ন। এফডিআরে বিভিন্ন মেয়াদে ৩% থেকে সর্বোচ্চ ১৩% পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বিশেষায়িত মিলে দেশের ৯টি ব্যাংকে এফডিআরে বিভিন্ন মেয়াদে ৩% সর্বোচ্চ সাড়ে ১০% পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। আর সাধারণ ডিপোজিটে সুদের হার ৩% থেকে ৪.৫%।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক
সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক। ব্যাংকটি তিন থেকে ছয় মাসের কম সময়ের সুদ দিচ্ছে ৭% থেকে ৯.২৫% পর্যন্ত। ছয় মাস থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য ব্যাংকটি দিচ্ছে ৭.২৫% থেকে ১০%, এক বছর থেকে তিন বছর মেয়াদি সময়ের সুদ ৭.৫% থেকে ৯.৫%। আর তিন বছরের বেশি সময়ের ডিপোজিটের জন্য ১০.৬৭% সুদ দিচ্ছে বেসিক ব্যাংক।
এছাড়া ৬.৩২% থেকে ৯% পর্যন্ত আমানতকারীদের সুদ দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা, বিডিবিএল, পিকেবি, রাকাব এবং বিকেবি।
বেসরকারি ব্যাংক
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের নতুন ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে – মিডল্যান্ড, মেঘনা, পদ্মা ব্যাংক, ইউনিয়ন, মধুমতি, এসবিএসি প্রবাসী উদ্যোক্তাদের এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ও গ্লোবাল ইসলামী। এ ব্যাংকগুলোয় সাধারণ সঞ্চয় রাখলে ২% থেকে ৮% সুদ পাবেন গ্রাহক। মেয়াদি আমানতে মিলবে ৪% থেকে ১১% পর্যন্ত। চতুর্থ প্রজন্মের কিছু ব্যাংক মেয়াদি আমানতের ওপরে সর্বোচ্চ ১২% থেকে ১৩% সুদ দিচ্ছে গ্রাহকদের।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে এনআরবি ব্যাংক। তিন থেকে ছয় মাস সময়ের সুদ ৫% থেকে ১০.৫০%, ছয় মাস থেকে এক বছরের বেশি সময়ের জন্য ৬.৫০% থেকে ১০.৭৫% সুদ দিচ্ছে ব্যাংকটি। তিন বছরের বেশি সময়ের আমানতের সুদ মিলছে ১২% থেকে ১৩.৪৬%। সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক (এসএবিসি) তিন মাস থেকে তিন বছর বা তার বেশি সময়ের ফিক্সড ডিপোজিটে ৫% থেকে ১২% পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে।
তিন মাস থেকে তিন বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য ৯.৭৫% থেকে ১১.২৫% সুদ দিচ্ছে এনআরবিসি। একই পরিমাণ সুদ দিচ্ছে বেঙ্গল ব্যাংক, সিটিজেন, মেঘনা এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। মেয়াদি আমানতে ১২% সুদ দিচ্ছে এবি ব্যাংক। এছাড়া ৭% থেকে ১১% সুদ দিচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, আইএফআইসি, আইসিবি, মার্কেন্টাইল, প্রিমিয়ার, উত্তরা ও ন্যাশনালসহ বেশকিছু ব্যাংক।
শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক
দেশের শরিয়াহভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ বিভিন্ন মেয়াদি সঞ্চয়ের ওপর সাড়ে ১০% থেকে ১১% এবং এক্সিম ব্যাংক ১০.৫০% থেকে ১১.৫০% পর্যন্ত মুনাফা দিচ্ছে। এছাড়া ৯% থেকে ১১% মুনাফা দিচ্ছে আল-আরাফাহ্, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, শাহজালাল, এক্সিম, ইউনিয়ন, আইসিবি ইসলামিক গ্লোবাল ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।
বিদেশি ব্যাংক
তবে বিদেশি ব্যাংকগুলোর সুদহার কম থাকে। ব্যাংকগুলো মেয়াদি আমানতে ৪% থেকে ৯% সুদ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। তিন বছর থেকে তার বেশি সময়ের আমানতে ১১.৫% ওপরে সুদ দিচ্ছে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন। ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ৬৫ থেকে প্রায় ৯৫, হাবিব ব্যাংক সর্বোচ্চ ৭% থেকে ১১% সুদ দিচ্ছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সুদ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের। বিদেশি খাতের ব্যাংকটির আমানতের সুদহার ২%। এছাড়া এইচএসবিসি এবং ওরি ব্যাংকের সুদহার ১% থেকে ৬%।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।