জুমবাংলা ডেস্ক : মেয়াদ-উত্তীর্ণ হওয়ার পর ছয় বছরের মধ্যে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা উত্তোলন না করলে সরকারের দায় তামাদি হয়ে যাবে। সদ্য প্রণীত সরকারি ঋণ আইন-২০২২ তে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সরকারের পক্ষে রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি ও কাউন্টার গ্যারান্টি দিতে পারবে। অর্থ বিভাগ ছাড়া অন্য কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি দিতে পারবে না। সরকারি ঋণ আইনে অর্থ বিভাগকে এককভাবে এ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
আইনে বলা হয়েছে, সরকারি ঋণ আইন ২০২২-এর অধীন প্রণীত বিধি বা গাইডলাইন বা প্রজ্ঞাপনের বিধান অনুযায়ী অর্থ বিভাগ রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি বা এ ধরনের নিশ্চয়তা প্রদান সংক্রান্ত কাউন্টার গ্যারান্টি দিতে পারবে।
আইনে বলা হয়েছে, উপধারা (১)-এর অধীন প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি বা কাউন্টার গ্যারান্টি সরকারের প্রচ্ছন্ন দায় হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রতি বছর এর একটি হিসাব সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের বাজেটের সঙ্গে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি বা কাউন্টার গ্যারান্টি থেকে উদ্ভূত প্রচ্ছন্ন দায় সরকারের প্রত্যক্ষ প্রচ্ছন্ন দায় হিসেবে গণ্য হবে এবং এ প্রচ্ছন্ন দায়ের ঝুঁকি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার বছর ভিত্তিক ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করতে পারবে। পাশাপাশি সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি বা কাউন্টার গ্যারান্টির জন্য উপযুক্ত ফি নির্ধারণ করতে পারবে।
সরকারি ঋণ আইনে সরকারকে ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, বাজেট ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে, ঘাটতি অর্থায়ন বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে দেশীয় বা বৈদেশিক উৎস থেকে দেশীয় বা বৈদেশিক মুদ্রায় সুদযুক্ত বা মুনাফাযুক্ত কিংবা সুদমুক্ত বা মুনাফামুক্ত যেকোনো প্রকারের ঋণ বা বিনিয়োগ সরকার গ্রহণ করতে পারবে।
আইন অনুযায়ী, সরকারি সিকিউরিটি ইস্যু ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি ঋণ অফিস এ আইনের অধীন তাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে সরকারি সিকিউরিটি সংরক্ষণ, হস্তান্তর ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি সিকিউরিটির ডিপোজিটরি স্থাপন করতে পারবে।
একইভাবে কোনো সরকারি সিকিউরিটির বিপরীতে বা শরীয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ গ্রহণের উদ্দেশ্যে সরকারি সিকিউরিটি ইস্যু করার লক্ষ্যে সরকার স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) গঠন বা নিযুক্ত করতে পারবে এবং এই এসপিভি কর্তৃক ইস্যুকৃত সরকারি সিকিউরিটির ধারকের পক্ষে ও তাদের স্বার্থ রক্ষায় ট্রাস্টি নিয়োগ দিতে পারবে।
আইনে বলা হয়েছে, সরকারি সিকিউরিটির ধারক প্রতিষ্ঠান আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হলে বা আইনানুগ প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানের অবসায়ন ঘটলে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিযুক্ত প্রশাসক বা নির্বাহী ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধীন সরকারি সিকিউরিটির বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে।
আইনে বলা হয়েছে, সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক গঠিত বা নিযুক্ত কোনো ট্রাস্ট ব্যতীত সরকার অন্য কোনো ট্রাস্টের কোনো প্রকার নোটিশ গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে না; বা এরূপ কোনো নোটিশ দ্বারা সরকারকে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে বাধ্য করা যাবে না; এবং এ ধরনের বিষয়ে সরকারকে ট্রাস্টি হিসাবে গণ্য করা যাবে না।
এ ছাড়া সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের সুদ বা মুনাফা বাবদ পাওনা অর্থ যে তারিখে পাওনা হয়েছে, ওই তারিখ থেকে ৬ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর, সংশ্লিষ্ট পাওনা বাবদ সরকারের দায় তামাদি হয়ে যাবে।
আইনে বলা হয়েছে, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর অধীন তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ক্ষুণ্ন না করে, কোনো ব্যক্তি এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত ক্ষেত্র ও পদ্ধতি অনুসরণ ব্যতীত, সরকারের দখলে বা হেফাজতে থাকা সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট বা এতদসংক্রান্ত কোনো দলিল পরিদর্শন করতে বা এর কোনো তথ্য চাইতে পারবে না।
অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের স্বত্ব অর্জনের উদ্দেশ্যে কোনো দরখাস্ত বা আবেদনে মিথ্যা তথ্য বা বক্তব্য দেয়া হলে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে আইনে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।