জুমবাংলা ডেস্ক: ৬০ এর দশকে শুরু হওয়া ঢেমশি ৯০ এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় চাষ হতো মোটামুটি পরিসরে। কিছু মানুষের অজ্ঞতা আর অবহেলার কারণে মহাউপকারী এবং গুরুত্বপূর্ণ এ ফসলটি হারিয়ে গেছে। তাই বর্তমানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই ফসল চাষে। রপ্তানিযোগ্য ফসল ঢেমশি পতিত জমিতে চাষ করা যায়।
ঢেমশি স্বল্প জীবনকালের একটি বিশেষ ফসল। বছরের যে সময়ে জমি পতিত থাকে বা ধান আবাদ করা সম্ভব হয় না সেসব জমিতে সাথী ফসল হিসেবেও ঢেমশি আবাদ করা যায়। আবার যেখানে ফসল হয় না সেখানেও এটি সহজে চাষাবাদ করা সম্ভব বলে বলছে কৃষি বিভাগ।
এর জন্য একদিকে যেমন রাসায়নিক সার দরকার হয় না তেমনি পোকামাকড় খুব একটা আক্রমণ করে না বলে বালাইনাশকেরও খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। চর এলাকা মাটি এবং বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালো আবাদ হয় এর এবং নিজেই আগাছা নষ্ট করে বলে আলাদা করে আগাছা দমন করতে হয় না ঢেমশির জন্য।
ঢেমশির বীজ বপনের সময় হলো কার্তিক অগ্রহায়ণ মাস এবং জৈবসার ব্যবহার করলে ফলন কিছুটা ভালো হতে পারে। প্রতি একর জমিতে চাষের জন্য বার কেজি বীজের দরকার হয় এবং সাধারণত একর প্রতি এক টন পর্যন্ত উৎপাদন হতে পারে।
আবার একই সময়ে এর ফুল থেকে মধু উৎপাদন সম্ভব এবং সেক্ষেত্রে প্রায় ১২০ কেজি পর্যন্ত মধু প্রতি একরে পাওয়া যায়।অন্যদিকে ফুল আসার আগ পর্যন্ত ঢেমশি পুষ্টিকর শাক হিসেবেও খাওয়া যায়। ড. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশে এর ব্যাপক সম্ভাবনার কথা বললেও আব্দুস ছালাম বলছেন সরকারের তরফ থেকে দৃষ্টি না দিলে আপাতত এর ভবিষ্যৎ নেই।
সার কীটনাশক লাগে না বলে এর প্রতি নীতিনির্ধারকদের আগ্রহ কম থাকে। আর এদেশে খাদ্যের ক্ষেত্রে পুষ্টির বিষয়টি গুরুত্ব পায় না। ফলে ঢেমশির মতো ফসলের দিকেও কর্তৃপক্ষের আগ্রহ কম। ঢেমশি চাল, আটা এবং মধু বিদেশে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।
তিনি লিখেছেন, ঢেমশিই পারে এ দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং অতি সহজে নিরাপদ খাদ্য প্রতিষ্ঠা করতে ।
কৃষিবিদ ডক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১ কেজি ধান ফলাতে শুধু পানিই লাগে প্রায় ৪ হাজার লিটার। আর এ কারণেই বাংলাদেশের মাটির নিচের পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে এবং যাচ্ছে। আধুনিক উন্নত ফসল ফলাতে গিয়ে অযাচিতভাবে ক্ষতিকারক রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করে মাটি, পানি, বাতাস এবং জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। আর এ কারণেই পুকুর, খালবিল, নদীনালায় মাছ কমে যাচ্ছে, জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে, লাখ লাখ মানুষ অহরহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।
পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট এবং সবচেয়ে দামি মধু এ ঢেমশির ফুল থেকেই উৎপাদন হয়। বিদেশের কোনো বাসায় বেড়াতে গেলে কেউ যখন ঢেমশির মধু নিয়ে যান তখন বাড়িওয়ালারা বেশ খুশি হন। ঢেমশি চাল, আটা, ছাতু, মধু এবং অন্যান্য খাদ্যপণ্য রফতানি করে বছরে শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
অপর দিকে, অতি সহজে ঢেমশিই পারে এ দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং নিরাপদ খাদ্য প্রতিষ্ঠা করতে। মাটি, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশের উন্নয়ন এবং জীববৈচিত্র্য ফিরে আনা যাবে খুব সহজেই যদি আমরা আবার অবহেলিত ফসল ঢেমশি চাষ করি।
সূত্র: এগ্রিকেয়ার২৪.কম
মোবাইলে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার সর্বোচ্চ লেনদেনের নতুন রেকর্ড
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।