জুমবাংলা ডেস্ক : টাঙ্গাইলের একটি মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষককে। শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বসাক মাত্র তিন দিন আগেই শহরের দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসা কমিটি তাকে সরিয়ে এর আগে দায়িত্বে থাকা মাওলানা সোহরাব হোসেনকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়।
একই সঙ্গে, মাদ্রাসাটিতে সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রমও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
২০২০ সালে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু সাঈদের মৃত্যুর পর পদটি শূন্য হয়। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সোহরাব হোসেন।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য নিয়োগপত্র আহ্বান করা হলেও পর্যাপ্ত-সংখ্যক আবেদন পাওয়া যায়নি।
৩০ আগস্ট পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ১২ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ পদে আবেদনের জন্য ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন সোহরাব। এ কারণে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোপাল চন্দ্র বসাককে।
গোপাল চন্দ্র জানান, ১৯৯১ সালে তিনি প্রভাষক হিসেবে মাদ্রাসায় যোগ দেন। তখন মাওলানা আবু সাইদ অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন।
তিনি বলেন, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ খালি হওয়ায় নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপত্র দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।”
যথাযথ নিয়মেই তিনি এ দায়িত্ব পান বলে ভাষ্য গোপাল চন্দ্রের।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল হাবীবকে। কিন্তু শুক্রবার সকালে মাদ্রাসা কমিটির জরুরি সভায় সোহরাব হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে টাঙ্গাইলের কোথাও কোনো পক্ষকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। তবে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার অপসারণের দাবি তোলে।
তাদের ভাষ্য, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে একজন হিন্দু শিক্ষকের নিয়োগ ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানার শামিল। তারা বিষয়টিকে “দেশের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের প্রচেষ্টা” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
এদিকে, মাদ্রাসা কমিটি প্রেসিডেন্ট কুদরত-এ-এলাহীর দাবি, গোপাল চন্দ্র বসাককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এবং মাদ্রাসার সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বলেন, “ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে, সে কারণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বৃহস্পতিবার রাতে গোপাল চন্দ্র বসাককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণ করে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
সূত্র : ঢাকা ট্রিবিউন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।