জুমবাংলা ডেস্ক : তন্নির বাবা জাহাঙ্গীর আলম শখের বশে ছবি আঁঁকতেন। তন্নির বড় বোন ফারজানা আক্তার চিত্রশিল্পী। তিনি ইউটিউবে আর্ট শেখান। বাবা ও বড় বোনকে দেখে তন্নি আর্টের কাজে উৎসাহ পান।
ইউটিউবে কেউ আর্ট শেখায়। কেউ ক্রাফট। তন্নি শেখান আর্ট, ক্রাফট দুটিই। কাজটি কিছুটা কঠিন।
কারণ জানা, দক্ষতায় কমতি থাকলে কাজ সুন্দর হয় না। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তন্নি কোথাও এসব শেখেননি। গাইতে গাইতে যেভাবে গায়েন হয় সেভাবে কাজ করতে গিয়েই দক্ষ হয়ে উঠেছেন তন্নি। এতটাই যে এখন আর্ট অ্যান্ড ক্রাফটকেই পেশা হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবছেন।
বললেন, ‘বাবা আর বড় আপাই আমার শিক্ষক।’ ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট ইউটিউবে চ্যানেল খোলেন তন্নি। প্রথম জোস গ্লাস অঙ্কন নামের একটি ভিডিও আপলোড করেন। মানুষ পছন্দ করে তাঁর ভিডিও। এখন পর্যন্ত তন্নির ইউটিউব গ্রাহক এক কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ১০০ জন।
দর্শকের বেশির ভাগেরই বয়স পাঁচ থেকে ২৫ বছর। ভারত, আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়ায় বেশি দেখা হয় তাঁর চ্যানেল। তাঁর বড় ভিডিওগুলো সাধারণত ১০ মিনিটের মতো হয়।
ইজি ক্রাফট আইডিয়াস শিরোনামে তন্নির একটি ভিডিও পাঁচ কোটি ১৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৪২ ভিউ হয়। ২২ মিনিটের ভিডিওটিতে তিনি শেখান স্কুল ক্রাফট, ড্রাই ক্রাফট, স্কুল হ্যাকস, অরিগামি ক্রাফট, পেপার মিনি গিফট। হাউ টু মেক এ পেপার পেনসিল বক্স শিরোনামে তাঁর অন্য একটি ভিডিও এক কোটি ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ ভিউ পায়। এখন পর্যন্ত তাঁর চ্যানেলের ভিউ ৫৪০ কোটি ছাড়িয়েছে। ইউটিউবের ডায়মন্ড প্লে বাটন পেয়েছে তাঁর চ্যানেল।
রুম সাজানোর জিনিস, মানুষকে উপহার দেওয়া যায় এমন জিনিস বানাতে পছন্দ করেন তন্নি। এ ছাড়া সায়েন্স ক্রাফট তৈরিতেও তাঁর সুনাম রয়েছে। মোটর, বৈদ্যুতিক তার ও ব্যাটারি দিয়ে কোনো জিনিস, চিনির পানি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কালার শেড তৈরি করা–এগুলো মূলত সায়েন্স ক্রাফট হিসেবে পরিচিত। প্রথমত তন্নি ট্রেন্ড ফলো করেন। তারপর সেটার সঙ্গে নিজের আইডিয়া যুক্ত করে নতুন ডিজাইন তৈরি করে ভিডিও তৈরি করেন। রঙিন কাগজ-কলম, পেনসিল, কাঁচি, আঠা ও স্কেল—এই সাধারণ জিনিসগুলো দিয়ে অসাধারণ কিছু তৈরি করে দেখান তিনি। অল্প সময়ে এত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ কী? তন্নি বললেন, ‘আমার বেশির ভাগ দর্শক শিক্ষার্থী। তাই তাদের কথা মাথায় রেখেই ভিডিওগুলো বানানোর চেষ্টা করি। ক্রাফট ট্রেন্ড, মিউজিক ট্রেন্ড, গ্রাহক চাহিদা ও ভিডিওর কোয়ালিটি–এই চারটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করি।’
তন্নি ইউটিউব এবং বিভিন্ন কম্পানি থেকে স্পন্সরের মাধ্যমে আয় করেন। আমেরিকা, চীনের বিভিন্ন শপ থেকেও স্পন্সর পেয়েছেন। তাঁর চ্যানেলে ওই সব শপের লিংক প্রমোট করা হয়। চ্যানেল থেকে তন্নির প্রথম আয় ৪৫ হাজার টাকা। তখন তিনি স্কুলে পড়তেন। ইউটিউব থেকে আসা অর্থে ঢাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন বলে জানালেন এই তরুণী। এ ছাড়া নিজের খরচ, বেড়ানো, পরিবারের সদস্যদের জন্য উপহার–সবই ব্যয় করেন নিজের আয় থেকে।
পড়াশোনা ও ক্রাফটিং দুটিই সমানভাবে করছেন তিনি। অন্যরা যখন ফেসবুকিংসহ নানা কাজে সময় নষ্ট করে, ওই সময়টা তন্নি কাজে লাগান। পড়াশোনা নয়তো ক্রাফটিংয়ে ডুব দেন। আগামী দিনে নতুন নতুন উদ্ভাবনী ভাবনায় ভিডিও বানাবেন বলে জানালেন এই তরুণী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।