বিনোদন ডেস্ক : এই সময়ে টেলিভিশন নাটকের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী তানিয়া বৃষ্টি। ঢাকাই সিনেমায় নিয়মিত হতে চেয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয়ও করেছেন। পছন্দ মতো চরিত্র না পাওয়ায় বড় পর্দায় নিয়মিত হতে পারেননি। তবে টেলিভিশন নাটকে তার চাহিদা রয়েছে। মুন্সিগঞ্জে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রী দুই বোনের মধ্যে ছোট। বাবা প্রবাসে থাকেন। মা আর বড় বোনের সঙ্গে থাকেন ঢাকার উত্তরায়। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ থেকে মার্কেটিংয়ে গ্রাজুয়েশন করেছেন। ২০১২ সালে ‘ভিট চ্যানেল আই টপ মডেল’ দ্বিতীয় রানারআপের মধ্য দিয়ে শোবিজ জগতে পা রাখেন তানিয়া বৃষ্টি।
সম্প্রতি ছোট পর্দার এই ব্যস্ততম অভিনেত্রী কথা প্রসঙ্গে জানালেন, গত ঈদে তার অভিনীত ডজন খানেক নাটক বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। হাতে রয়েছে বেশ কিছু একক নাটকের কাজ। তিনি জানালেন, দেশে চলমান সংকট ও অস্থিরতার কারণে গত প্রায় ১৫ দিন বাসায়ই কাটিয়েছেন।
তবে সম্প্রতি কাজে ফিরেছেন জানিয়ে তানিয়া বলেন, বেশ কয়েকটি একক নাটকে অভিনয় করছেন তিনি। শ্যুটিং শুরু হয়েছে ইমরান হাওলাদার পরিচালিত একক নাটকের। নাটকটির নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এতে তানিয়ার বিপরীতে অভিনয় করছেন নিলয় আলমগীর। তানিয়া জানান, আগামী মাসের (আগস্ট) ১৩ তারিখ আরেকটি একক নাটকের শ্যুটিংয়ের জন্য সাউথ কোরিয়া যাচ্ছেন। হাসান রেজাউলের পরিচালনায় নাটকটিতে তানিয়ার কো-আর্টিস্ট ইয়াশ রোহান। তারপর অন্য একটি নাটকের শ্যুটিংয়ে তার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে। ওই নাটকে তানিয়ার বিপরীতে অভিনয় করবেন নিলয় আলমগীর। এ ছাড়া চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় নাম চূড়ান্ত না হওয়া অপর একটি নাটকে অভিনয় করবেন তানিয়া। নাটকটিতে আরও রয়েছেন জুনায়েদ বোগদাদী, সাদিয়া ইসলাম মৌসহ আরও অনেকে।
নাটকে অভিনয় নিয়ে তানিয়া বৃষ্টি বলেন, ‘এখন কিন্তু যেকোনো নাটকে কাজ করার আগে গল্পটা ভালো হওয়া জরুরি মনে করি। কারণ দর্শক গল্পটাই আগে খোঁজেন। এরপর চরিত্রে নিজের অভিনয় করার সুযোগটা কেমন আছে তাও ভেবে দেখি।’
অফ ট্র্যাকের নাটকে চ্যালেঞ্জিং চরিত্র তার পছন্দের জানিয়ে তানিয়া বলেন, ‘অফ ট্র্যাকের গল্পে আমার প্রথম কাজ ছিল মোশাররফ করিমের সঙ্গে। জাকিউল ইসলাম রিপন পরিচালিত ‘পিনিকেই ঝিনিক’ নাটকটিতে দর্শকের দারুণ সাড়া পেয়েছিলাম। তারপর থেকেই ডিরেক্টররা আমাকে অফ ট্র্যাকের ক্যারেক্টারে ভাবতে শুরু করেন। এরপরে আমি মোশাররফ করিমের সাথে এরকম বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেছি।’
বরাবরই নাটকের ছোট পর্দা থেকে সিনেমার বড় পর্দার প্রতিই বেশি আগ্রহ ছিল তার। ক্যারিয়ারের শুরুতে সুযোগ পেয়ে যান আকরাম খানের ‘ঘাসফুল’ ছবিতে। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমার প্রস্তাব পেলেও নিয়মিত হননি বড় পর্দায়।
বড় পর্দায় ফেরা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বড় পর্দার প্রতিষ্ঠিত নায়িকা হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও নানা কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। নাটকের ব্যস্ততায় সিনেমা নিয়ে এখন আর ভাবনা নেই। তবে ভালো প্রস্তাব পেলে ব্যাটে-বলে মিললে হয়তো ফেরা হবে সিনেমায়।’
পছন্দের নায়ক কে জানতে চাইলে মিষ্টি হেসে তানিয়া জানান, ‘যেকোনো একজনের নাম নেওয়াটা ডিফিকাল্ট। তবে কো-আর্টিস্টের জায়গা থেকে বন্ডিং বা সাপোর্টের কথা বললে খুব বেশি ফ্রেন্ডলি নিলয় আলমগীর। দ্বিতীয়ত যদি বলি শুধু কো-অ্যাক্টর হিসেবে নয় একজন অ্যাডভাইজার বা একজন গাইড বলেন আর শিক্ষক বলেন পছন্দের হলেন মোশাররফ করিম। তার কাছ থেকে প্রতি মুহূর্তে শেখা যায়।’
‘আর যদি জুটি হিসেবে বলেন, যেটা মানুষ খুবই পছন্দ করেছে, তা ছাড়া আমার সঙ্গে তুই-তুকারি’র ফ্রেন্ডশিপটা আছে যার সে হলো আরশ খান।’ যোগ করেন তানিয়া।
আইডল হিসেবে কাকে মানেন জানতে চাইলে তানিয়ার স্পষ্ট জবাব- জয়া আহসান। তিনি বলেন, ‘জয়া আপুর অভিনয় আমার খুব ভালো লাগে। এত ন্যাচারাল অভিনয় করেন তিনি! আমি তাকে অ্যাডমায়ার করি।’
শিগগিরই বিয়ে করছেন কিনা জানতে চাইলে তানিয়া জানান, ‘আপাতত মাথায় এইটা নাই। এখন নিজের কাজগুলোকেই বেশি ফোকাস করছি। কয়েক বছর যাক তারপর ভাববো।’
কেমন মানুষকে বিয়ে করতে চান জানতে চাইলে তানিয়া বলেন, ‘দেখতে কেমন বা সম্পদশালী কিনা এটা কোনো মেটার করে না। যাকে বিয়ে করবো তাকে ব্যক্তিত্ববান, সৎ চরিত্রের অধিকারী এবং অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই তিনটা জিনিস থাকলেই সফল ও সুখী হওয়া সম্ভব। এমন পুরুষের হাত ধরে প্রাউড ফিল করা যায়।’
দেশে চলমান সংকট এবং ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি অবশ্যই ছাত্রদের পক্ষে। তাদের দাবি খুবই সঙ্গত ছিল। কেননা মেধার মূল্যায়নটা ভীষণ জরুরি।’ তিনি যোগ করেন, ‘ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। ছাত্রদের জয় হয়েছে। কিন্তু মাঝখান থেকে এতগুলো তাজা প্রাণ ঝরে গেল এটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং দুঃখজনক।’ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো অযৌক্তিক বলে তিনি এর তীব্র নিন্দা জানান।
সবশেষে সফলতার মূলমন্ত্র কি জানতে চাওয়া হলে তানিয়া বৃষ্টি বলেন, ‘হানড্রেড পারসেন্ট ফোকাস থাকতে হবে এবং হার্ডওয়ার্ক করতে হবে।’ সফল হতে হলে অবশ্যই নিজের কাজের প্রতি প্যাশনেট থাকাটা জরুরি বলে মনে করেন এই অভিনেত্রী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।