তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল

ধর্ম ডেস্ক : বছর ঘুরে রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে বারবার আসে পবিত্র মাহে রমজান। এই মাস হলো আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের সেরা সময়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, তারাবির নামাজ কি সুন্নত নাকি নফল? আসুন, কোরআন ও হাদিসের আলোকে তা জানার চেষ্টা করি।

তারাবির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজানের বিশেষ ইবাদতের মধ্যে তারাবির নামাজ অন্যতম। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা শক্তিশালী সুন্নত। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিজে তারাবি নামাজ আদায় করেছেন এবং সাহাবীদেরকেও তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।

হাদিসে বর্ণিত আছে, রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়। রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে। রমজানের বিশেষ ফজিলতের মধ্যে অন্যতম হলো রাইয়ান দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ।

তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা

রমজান মাসে এশার নামাজের ফরজ ও সুন্নত আদায়ের পর এবং বিতরের আগে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা হয়। তবে কেউ কেউ ১০ রাকাত পড়লেও মূল সুন্নত হলো ২০ রাকাত।

প্রতি দুই রাকাত পর বিশেষ দোয়া ও তাসবিহ পাঠ করা হয়। আর দীর্ঘ নামাজের মাঝে বিরতির কারণে একে “সালাতুত তারাবিহ” বলা হয়। রাসুল (সা.) কখনো ৮ রাকাত, কখনো ১৬ রাকাত, আবার কখনো ২০ রাকাত পড়েছেন। তবে নিয়মিত ২০ রাকাত জামাতে আদায় করা হয়নি, যাতে তা ফরজ বা ওয়াজিব না হয়ে যায়।

তারাবি জামাতে পড়ার গুরুত্ব

তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করা অধিক সওয়াবের কাজ। রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজাগুলোকে ফরজ করেছেন এবং রাতে তারাবি নামাজকে বিশেষ পুণ্যের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাই আমাদের সকলের উচিত এই নামাজ জামাতে আদায় করা।

রোজার গুরুত্ব ও পুরস্কার

প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘রোজা ছাড়া আদম সন্তানের প্রত্যেকটি কাজ তার নিজের জন্য। তবে রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর পুরস্কার দেব।’ রোজা মানুষকে আখেরাতমুখী করে তোলে এবং জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচার ঢাল স্বরূপ।

রমজানে দীর্ঘ সময় না খেয়েও কীভাবে শক্তি ধরে রাখবেন?

তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি রাতের যেকোনো সময়ে আদায় করা গেলেও এশার পর আদায় করাই উত্তম। মাহে রমজানের বিশেষ ফজিলত লাভের জন্য আমাদের উচিত নিয়মিত তারাবি আদায় করা এবং রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত যথাযথভাবে কাজে লাগানো।