বিনোদন ডেস্ক : মার্কিন পপ গায়িকা টেইলর সুইফটের অপ্রীতিকর ও ভুয়া ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই ছবিগুলো ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে নতুন আইনে তৈরির আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদেরা।
এক্স (টুইটার) ও টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টেইলর সুইফটের ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়েছে। আর ছবিগুলো লাখ লাখ মানুষে দেখেছেন। এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রতিনিধি জো মোরেলে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
এক বিবৃতিতে এক্স বলে, প্ল্যাটফর্মটি ছবিগুলো ‘সক্রিয়ভাবে অপসারণের’ জন্য কাজ করছে। সেই সঙ্গে এই ছবি দেওয়ার সঙ্গে যেসব অ্যাকাউন্ট জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ‘কার্যকরী পদক্ষেপ’ নেওয়া হচ্ছে।
প্ল্যাটফর্মটি আরও বলে, ‘বিষয়টিকে আমরা খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করছি যেন আর কোনো নিয়মের ভঙ্গে হলে সঙ্গে সঙ্গে তা চিহ্নিত করা যায় এবং কনটেন্টগুলো সরিয়ে ফেলা যায়।’
টেইলর সুইফটের বেশ কিছু অপ্রীতিকর ডিপফেক ছবির প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু একটি ছবি সরিয়ে ফেলার আগেই ৪৭০ লাখ ভিউ হয়।
ডিপফেক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে কারও দেহ বা মুখের কারসাজি করে ভিডিও তৈরি করা হয়। ২০২৩ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৯ সাল থেকে এআইয়ের মাধ্যমে কারসাজি করা এই ধরনের ছবিগুলো তৈরির হার ৫৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
ডিপফেক ছবি তৈরি ও শেয়ারে ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনো ফেডারেল আইন তৈরি হয়নি যুক্তরাষ্ট্রে। তবে এই ধরনের ঘটনা বন্ধে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অনলাইন সেফটি অ্যাক্ট ২০২৩ এর মাধ্যমে ডিপফেক পর্নোগ্রাফি তৈরি ও শেয়ার করাকে অবৈধ করেছে যুক্তরাজ্য। গত বছর প্রস্তাবিত প্রিভেনটিং ডিপফেকস অব ইনটিমেট ইমেজ অ্যাক্ট প্রস্তাব করেন ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি মোরেলে। এই আইনে সম্মতি ছাড়া ডিপফেক পর্নোগ্রাফি শেয়ার করাকে অবৈধ করা হয়। মোরেলে এই বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ৷
তিনি বলেন, ছবি ও ভিডিওগুলো ‘অপ্রতিরোধ্য মানসিক, আর্থিক ও সম্মানের’ ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং দুর্ভাগ্যবশত এর মাধ্যমে নারীদের বেশি ক্ষতি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্নোগ্রাফিতে বিপুল পরিমাণ ডিপফেক ব্যবহার করা হয়। নারীদের লক্ষ্য করেই প্রায় ৯৯ শতাংশ এই ধরনের কনটেন্ট তৈরি করা হয়।
এক্স প্ল্যাটফর্মের এক পোস্টে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক ইভেন্ট ডি ক্লার্ক বলেন, টেইলর সুইফটের সঙ্গে যা ঘটেছে তা নতুন কিছু নয়। ‘বছর বছর’ ধরে নারীরা এসব প্রযুক্তির শিকার হচ্ছে। এআই প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ডিপফেক তৈরি করা সহজ ও সস্তা হয়েছে।
টেইলর সুইফট এসব ছবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ডেইলি মেইল বলেছে, যে সাইট এআইভিত্তিক এসব ছবি প্রকাশ করেছে, সেটির বিরুদ্ধে ‘আইনি ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে তার দল।
বিশ্বজুড়ে এই বছর নির্বাচনে কোটি কোটি মানুষ ভোট দেবে। এই নির্বাচনে এআইভিত্তিক বিভিন্ন ভুয়া কনটেন্ট প্রচার হতে পারে বলে রাজনীতিবিদ ও প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের উদ্বেগ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কণ্ঠ নকল করে এই সপ্তাহে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফোনকল করা হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এআইয়ের ব্যবহার করে এই কল করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।