জুমবাংলা ডেস্ক : নরসিংদীর জামিয়া মোহাম্মদিয়া দারুল উলুম এতিমখানা চরভাসানিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এতিমদের নামে আসা সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
Table of Contents
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক
নরসিংদী সদর উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নে অবস্থিত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্র্যান্টপ্রাপ্ত এই মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মুফতি হাবিবুল্লাহ। অভিযোগ রয়েছে, মাদরাসার ১০ শিক্ষার্থীর নামে প্রতি মাসে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ আসে, যা আত্মসাৎ করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্যের কাছ থেকে প্রত্যায়নপত্র নিয়ে সরকারি বরাদ্দ উত্তোলন করে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
স্থানীয়দের বক্তব্য
পাইকারচর ইউপি সদস্য শাহীন মিয়া বলেন, “মুফতি হাবিবুল্লাহ আমার কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের নামে প্রত্যয়নপত্র স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন। তবে আমি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই।”
চরভাসানিয়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে আকসানুল্লাহ জানান, “আমি সাত বছর ধরে এই মাদরাসায় পড়ালেখা করছি। আমার নামে টাকা বরাদ্দ আসে, কিন্তু কখনো কোনো টাকা পাইনি।” অপর শিক্ষার্থী জহিরুদ্দিন জিসান বলেন, “আমার বাবা নেই, সংসার কষ্টে চলে। আমার নামে সরকারি বরাদ্দ আসে, কিন্তু সেই টাকা আমি পাইনি।”
একই গ্রামের আজিজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, “আমার ছেলে জহিরুল ইসলামকে মাদরাসায় ভর্তি করানোর জন্য ৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। আমি তার ভরণপোষণ দিতে পারি না, তাই সরকারি সহায়তা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু কোনো দিন সে সেই টাকা পায়নি। আমরা এর বিচার চাই।”
গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা
অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা মাদরাসায় গেলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মুফতি হাবিবুল্লাহ তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। তিনি ক্যামেরাস্ট্যান্ড ভেঙে ফেলেন, মাইক্রোফোন ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন এবং গণধোলাইয়ের হুমকি দেন। এ ঘটনায় মাধবদী থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রশাসনের বক্তব্য
নরসিংদী সদর সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ক্যাপিটেশন গ্রান্ট কী?
নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুযায়ী নিবন্ধনপ্রাপ্ত বেসরকারি এতিমখানাগুলোর শিশুদের প্রতিপালন, চিকিৎসা ও শিক্ষা সহায়তার জন্য সরকার ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ দেয়। এই অনুদান সরাসরি সুবিধাভোগীদের পাওয়ার কথা থাকলেও অভিযোগ উঠেছে যে, কিছু অসাধু ব্যক্তি এই অর্থ আত্মসাৎ করছেন।
এ ঘটনায় যথাযথ তদন্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।