সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ও চিকনাগুল বাজারে ঈদুল আজহা উপলক্ষে মাত্র সাত দিনের জন্য অনুমোদন পাওয়া দুটি অস্থায়ী পশুর হাট পাঁচ মাস পেরিয়েও অবাধে চলছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে এবং বৈধ পশুর হাটের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
জানা যায়, গত ২১ মে ২০২৫ তারিখে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঈদুল আজহা উপলক্ষে দরবস্ত মৌজার ৫০১ নং দাগের আংশিক ভূমি ও চিকনাগুল বাজারকে সাত দিনের জন্য অস্থায়ী পশুর হাট হিসেবে ইজারা প্রদানের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। শর্ত অনুযায়ী ১ জুন থেকে ৭ জুন পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। দরবস্ত হাটের ইজারা নেন খরিলহাট মাদ্রাসার মহতামিম মাওলানা আবু হানিফ এবং চিকনাগুল বাজারের ইজারা নেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইকবাল হোসেন। তার অনুপস্থিতিতে বাজার পরিচালনা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দিন।
কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করেও প্রভাবশালী একটি মহল প্রশাসনের যোগসাজশে এই দুটি হাট অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন এসব বাজারে অবৈধ রশিদের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, এই বাজারগুলো এখন ভারতীয় চোরাই গরু ও মহিষের মূল কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। অবৈধ রশিদের মাধ্যমে এসব পশুকে বৈধতার ছাপ দেওয়া হচ্ছে, ফলে বৈধ ও চোরাই পশুর মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে বৈধ ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল জানান, মহাসড়কের পাশে হওয়ায় এসব বাজারে ভারতীয় পশু সহজে বিক্রি করা যায়। তবে তিনি স্বীকার করেন, বাজারগুলো বৈধ নয়। দরবস্ত হাটের ইজারাদার আবু হানিফ দাবি করেন, সাত দিনের পর তাকে পুনরায় এক বছরের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে চিকনাগুল বাজার পরিচালনাকারী জহির উদ্দিন বলেন, প্রশাসন এ বিষয়ে অবগত।
দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার বলেন, যদি এক সপ্তাহের বেশি সময়ের অনুমোদন না থাকে, তবে বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জর্জ মিত্র চাকমা জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে মাত্র সাত দিনের ইজারা দেওয়া হয়েছিল। এখন যদি হাট চলমান থাকে, তা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, অবৈধভাবে পরিচালিত হাট দুটি দ্রুত বন্ধ করে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চনা থেকে রক্ষা ও বৈধ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।