বিনোদন ডেস্ক : ইট-পাথরে গড়া বড় শহরগুলোই শুধু না, অজপাড়াগাঁয়ের বাতাসেও এখন শীতলতা নাই। হাওয়ার পরশে যেন দাবানলের অনুভূতি! গুগল ওয়েদারে তাপমাত্রা যদি দেখায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, উপলব্ধি দেখায় ৪২ বা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কেন এই অবস্থা? সামাজিক মাধ্যমে সাম্প্রতিক পোস্টগুলো থেকে মনে হয়, তারা গাছ কমে যাওয়াকেই কারণ হিসেবে দেখছেন। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, প্রতিবছরই পৃথিবীর বায়ুতে যে তাপমাত্রা বাড়ছে এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বৃক্ষনিধন।
প্রতিবছর সরকারিভাবে বৃক্ষরোপণে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নানা কর্মসূচি নেয়া হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনও এই ধরনের কার্যক্রম চালায়। তবে গ্রীষ্মের দাবদাহ শুরু হলে ফেসবুকে গাছ লাগানোর ইস্যু সবচেয়ে বেশি চর্চিত হয়। কিন্তু দেড়-দুমাস পরই যখন প্রশান্তির বৃষ্টি নিয়ে বর্ষা চলে আসে তখন গাছ লাগানোর আলাপ খুব বেশি চোখে পড়ে না ফেসবুকে। অথচ বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুমই গাছ লাগানোর শ্রেষ্ঠ সময়।
এবারও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ মানুষ ফেসবুকে বৃক্ষ রোপণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করছেন। অনেকে এক সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনে বহুল প্রচারিত একটি বিজ্ঞাপনের কথা স্মরণ করে আবেগতাড়িত হচ্ছেন। বিজ্ঞাপনটিতে কিংবদন্তী অভিনেতা আবুল খায়ের ছিলেন একজন কবিরাজ। একদিন হাঁটতে হাঁটতে আকাশমুখী গাছের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবছিলেন তিনি। এরমধ্যেই সেখানে আসেন গাছের মালিক। তাদের দুজনের কথোপকথন ছিল এমন-
গাছের মালিক: কি গো কবিরাজ, কী খোঁজতাসেন?
কবিরাজ: আইচ্ছা, এইখানে একটা অর্জুন গাছ আছিল না?
গাছের মালিক: আছিল, কাইট্টা ফালাইছি।
কবিরাজ: এইখানে একটা শিশু গাছ আর ওই মাথায় একটা হরতকী গাছ।
গাছের মালিক: আছিলো, কাইট্টা ফালাইছি।
কবিরাজ: আপনের গাছ?
গাছের মালিক: হ। টেকার দরকার পড়ছে তাই বিক্রি করছি।
কবিরাজ: গাছ লাগাইছিলো কে?
গাছের মালিক: আমার বাবায়।
কবিরাজ: আপনি কী লাগাইছেন?
গাছের মালিক: আমি কী লাগাইছি?
কবিরাজ- হ, ভবিষ্যতে আপনার পোলারও টেকার দরকার হইতে পারে।
এরপর কবিরাজ একদল গ্রামবাসীর উদ্দেশে বলেন- আমি আর আপনাগোর কবিরাজ নাই। আপনারা চাইলেও আমি আর ওষুধ দিতে পারুম না। প্রশ্ন করতে পারেন কেন? উত্তর একটাই। সাপ্লাই শেষ। গাছ নাই তো আমার ওষুধও নাই। লাকড়ি বানায়া চুলায় দিছি, খাট-পালঙ্ক বানায়া শুইয়া রইছি, টেকার দরকার পড়ছে গাছ কাটছি। যা কাইটা ফালাইসি তা কি পূরণ করছি? বাপ-দাদার লাগানো গাছ কাটছি। নিজেগো সন্তানের জন্য কী রাখছি? অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি ধীরে ধীরে শেষ হইতাসে। চোখ ভইরা সবুজ দেখি না। ভবিষ্যতে কেমনে দম লইবেন?
সাময়িক স্বস্তি দিলেও গরমে ৩ খাবার না খাওয়াই শ্রেয়, তাতে হতে পারে বিপদের কারণ
মানুষের মাঝে বৃক্ষ নিধন বিরোধী সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর বিজ্ঞাপনটি তৈরি করেছিল। নব্বই দশকে বিটিভি যখন দেশের একমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল ছিল তখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ফাঁকে বিজ্ঞাপনটি বেশি প্রচার করা হতো। পরবর্তী সময়িও বিজ্ঞাপনটি দেখা গেছে বিটিভিতে।
এই বিজ্ঞাপনে মরহুম আবুল খায়েরের অসাধারণ আর হৃদয়গ্রাহী সংলাপ সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ফিরতো।
বিজ্ঞাপনটির সংলাপ ফেসবুকে শেয়ার করে অনেকেই এটি আবারও টেলিভিশনে ব্যাপকভাবে প্রচারের দাবি জানাচ্ছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।