আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রক্ত দিয়ে চিঠি লেখা। বহুমূল্য উপহার আনতে সাত-সমুদ্র তোরো নদী পাড়ি। প্রেয়সীর মন পেতে কত কিছুই না করতে হয়! তা বলে প্রেমিকার ঘামে ভেজা আপেলে কামড়! প্রেমের পরীক্ষার এখানেই শেষ নয়। আপেলের টুকরো চাপা থাকবে বগলের তলায়! প্রায় ২০০ বছর আগে এমনই এক অদ্ভুত নিয়ম চালু ছিল ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ায়। গবেষকদের দাবি, উনিশ শতকে এভাবেই মনের মানুষকে বেছে নিতেন অস্ট্রিয়ার গ্রামের মেয়েরা। সম্প্রতি নথি ঘেঁটে সেই তথ্য সামনে এনেছেন তাঁরা। ঐতিহাসিকদের দাবি, উনিশ শতকে প্রেমিক নির্বাচনের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল অস্ট্রিয়ার মেয়েদের। এর জন্য স্বয়ংবর সভার আদলে অনুষ্ঠান হত গ্রামে। সেখানেই মনের মানুষ বেছে নিতেই তাঁরা। তবে পছন্দের পুরুষকে দিতে হত পরীক্ষা। তাতে উত্তীর্ণ হলেই নিজেকে সেই পুরুষের হাতে সঁপে দিতে দ্বিধা করতেন না সে যুগের তরুণীরা।
সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, প্রেমিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অস্ট্রিয়ার গ্রামগুলিতে বিশেষ এক ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত। ওই অনুষ্ঠানে একত্রিত হতেন গ্রামের তরুণ-তরুণীরা। চলত রাতভর খানাপিনা, নাচ-গান। নাচের জন্য বাজনাদারদের দল আসত গ্রামে। অনুষ্ঠানের মাঝে হঠাৎ হঠাৎ থামিয়ে দেওয়া হোত বাজনা। এর সঙ্গে থেমে যেত নাচ। এর পরই মনের মানুষকে বেছে নিতে পারতেন তরুণীরা। প্রসঙ্গত, নাচের সময় বগলের তলায় আপেলের একটি কাটা টুকরো চেপে রাখতেন তাঁরা। যাঁকে পছন্দ হোত, তাঁকে ওই আপেলের টুকরো খেতে দিতেন অস্ট্রিয়ার গ্রামের মেয়েরা। বগলের ঘামে ভেজা আপেলের টুকরো খেতে পারলে তবেই সেই তরুণীর হৃদয় জেতা যেত।
উনিশ শতকের একেবারে শুরু দিকে চালু হওয়া এই প্রথা প্রায় ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে অস্ট্রিয়ার গ্রামগুলিতে চলেছিল। ঐতিহাসিকদের দাবি, এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলিতে হাজির থাকতেন স্থানীয় জমিদাররা। থাকতেন ওই এলাকার গির্জার ফাদারও। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে অনেক বদল দেখা গিয়েছে। শেষের দিকে সামান্য একটা প্রথা হিসেবেই এটি রয়ে গিয়েছিল। তবে এই প্রথাকে শুভ বলে মানতেন অস্ট্রিয়ার গ্রামবাসীরা।
প্রসঙ্গত, ইউরোপ ও আমেরিকায় প্রেমের প্রতীক হিসেবে আপেলের বহুল ব্যবহার দীর্ঘদিন ধরেই লক্ষ্য করা গিয়েছে। ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে বিশেষত ফ্রান্স ও ব্রিটেনে প্রেমিকাকে পেতে ডুয়েল লড়ার উল্লেখ রয়েছে। প্রথম দিকে এই ডুয়েল হত তলোয়ার ও ছুরির। পরবর্তী কালে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েও ডুয়েল শুরু হয়ে যায়। যা একটা সময় আইন করে বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার।
নিজের কিডনির পাথর দিয়ে ভাস্কর্য! বৃটিশ স্থপতি বললেন, কোনও কিছুই ফেলার নয়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।