বিনোদন ডেস্ক : ‘গদর ২’সিনেমার সাফল্যের পার্টিতে এক ফ্রেমে ধরা দিলেন শাহরুখ খান এবং সানি দেওল। ১৬ বছর ধরে দুই অভিনেতার মধ্যে যে বরফ জমেছিল তা শেষ পর্যন্ত গলেছে। কিন্তু বচ্চন পরিবারের সঙ্গে সানির দূরত্ব ক্রমশ যেন বেড়েই চলেছে। বচ্চন পরিবারের তিন সদস্যকে কোনওভাবেই সহ্য করতে পারেন না সানি।
অমিতাভ বচ্চনের পুত্র অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ ভাল নয় সানির। বলিপাড়ায় অভিষেকের আগে থেকেই সানির সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে যায় জুনিয়র বচ্চনের।
১৯৯৭ সালে ‘বর্ডার’ মুক্তি পাওয়ার পর সানির জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায় বলিপাড়ায়। সানির অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে যান বলি পরিচালক জেপি দত্ত। পরবর্তী ছবিতে সানিকে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশও করেন জেপি।
‘রিফিউজি’ ছবির চিত্রনাট্য লিখে শেষ করে ফেলেছিলেন জেপি দত্ত। সেই সময় অমিতাভ জানতে পারেন পরিচালকের হাতে একটি ভাল চিত্রনাট্য রয়েছে। নিজের পুত্রের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জেপি দত্তের সঙ্গে দেখা করেন অমিতাভ।
‘রিফিউজি’ ছবির মাধ্যমে যেন অভিষেক বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন জেপি দত্তকে সেই অনুরোধ করেন অমিতাভ। অমিতাভের কথা মেনে সানির পরিবর্তে অভিষেককেই ‘রিফিউজি’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন জেপি দত্ত।
অভিষেকের স্ত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সঙ্গেও সানির সম্পর্ক তিক্ত বলে কানাঘুষো শোনা যায়। এমনকি এক পুরনো সাক্ষাৎকারে সানি বলেছিলেন, “বলিপাড়ায় এমন কোনও কোনও জনপ্রিয় অভিনেত্রী রয়েছেন যারা আমার সঙ্গে কাজ করতে চাননি। তাদের মধ্যে ঐশ্বরিয়া একজন। আমার জায়গায় শাহরুখ খান, সালমান খান বা হৃত্বিক রোশন থাকলে তিনি নিশ্চয় কাজ করতেন।”
সানি যখন ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে সেই সময় অভিনয়জগতে নিজের পরিচিতি গড়তে শুরু করেন ঐশ্বরিয়া। সানির সঙ্গে ‘ইন্ডিয়ান’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান ঐশ্বরিয়া।
সানির সঙ্গে ‘ইন্ডিয়ান’ ছবির বেশ কিছু দৃশ্য শুটও করেন ঐশ্বরিয়া। বলিউডের অন্দরমহল সূত্রে জানা যায়, এই ছবিতে একটি গানের দৃশ্যও শুট করে ফেলেছিলেন দুই তারকা। গানটি শুট করতে এক কোটি রুপি খরচ হয়েছিল।
কিন্তু ‘ইন্ডিয়ান’ ছবি থেকে মাঝপথে বেরিয়ে যান ঐশ্বরিয়া। অভিনেত্রী ছেড়ে যাওয়ার পর সেই ছবির শুটিংও বন্ধ হয়ে যায়।
সানির দাবি, ‘ইন্ডিয়ান’ ছবি ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও পরে অন্যান্য ছবিতে অভিনয়ের জন্য ঐশ্বরিয়াকে একাধিকবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু বারবার সানির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন ঐশ্বরিয়া।
শুধু অভিষেক এবং ঐশ্বরিয়াই নয়, অমিতাভের প্রতিও ক্ষোভ রয়েছে সানির। অমিতাভের সঙ্গে সানির বাবা ধর্মেন্দ্রের বন্ধুত্ব বহু দিনের। সেই সূত্রে অমিতাভের সঙ্গে আলাপ সানির।
১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বেতাব’ ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন সানি। সেই সময় বলিউডে জনপ্রিয়তার শিখরে ছিলেন অমিতাভ।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, ‘বেতাব’ ছবির পর সানির রাতারাতি জনপ্রিয়তা দেখে নাকি অমিতাভ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন।
১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় ‘ইনসানিয়ত’। এই ছবিতে সানি এবং অমিতাভকে একসঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায়। কানাঘুষো শোনা যায়, এই ছবির শুটিংয়ের সময় অমিতাভের প্রতি রাগ জন্মায় সানির।
সানি এক পুরনো সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘ইনসানিয়ত’ ছবিতে সানির চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিনেতার কাছে দাবি করেন ছবির পরিচালক টোনি জুনেজা। কিন্তু শুটিংয়ের সময় সব কিছু বদলে যায়।
সানির চরিত্রের থেকে অমিতাভ যে চরিত্রে অভিনয় করছিলেন তা আরও যত্ন নিয়ে বুনতে শুরু করেন টোনি। এমনকি ছবি মুক্তির আগে যে পোস্টার তৈরি করা হয় সেখানেও সানির চেয়ে অমিতাভকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় বলে দাবি করেন সানি।
বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, ‘ইনসানিয়ত’ ছবিতে কাজ করার পর আর অমিতাভের সঙ্গে কাজ করতে চাননি সানি।
চলতি বছরের জুন মাসে সানির পুত্র করন দেওলের বিয়ে হয়। সানির বাড়ি থেকে অমিতাভের বাড়ির ঢিলছোড়া দূরত্ব হওয়া সত্ত্বেও বচ্চন পরিবারকে পুত্রের বিয়েতে নিমন্ত্রণ করেননি সানি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।