জুমবাংলা ডেস্ক : ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এ দিন মধ্যরাত থেকে ফের শুরু হচ্ছে মাছ ধরা।
গত কয়েকদিন ধরেই কক্সবাজার শহরসহ জেলার জেলেপল্লীগুলোতে চলছে জোর প্রস্তুতি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরপরই যাতে মাছ ধরা শুরু করা যায়- এ লক্ষ্যে কক্সবাজারের অর্ধ লক্ষাধিক জেলে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। এমনটি জানিয়েছেন জেলা বোট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
দেখা গেছে, সাগরে যাবার প্রস্তুতি হিসাবে কেউ নৌকা মেরামত করেছে, কেউবা করেছে জাল মেরামত। আবার কেউ কেউ গুদাম থেকে জালের বস্তা সৈকতে আনছে। পাশাপাশি সৈকতের টিলায় অথবা ডকে নোঙর করে রাখা নৌকাগুলোতেও চলছে ধোয়া-মোছার কাজ।
জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, কক্সবাজারে মাছ ধরার ছোট-বড় ৭ হাজারের অধিক যান্ত্রিক বোট রয়েছে। এসব বোটে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার রাতেই মাছ ধরা শুরু করতে প্রস্তুত অর্ধ লক্ষাধিক জেলে। বাকি জেলেরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা দুই-একদিনের মধ্যেই সাগরে নামবে।
ফিশারিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, গত ১২ অক্টোবর থেকে সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এরপর থেকেই মাছের অভাবে সাগরপাড়ের এ শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাট এখন খা খা করছে। জেলেদের প্রস্তুতির কারণে ফিশারিঘাটসহ জেলার জেলেপল্লীগুলোতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে শিগগিরই।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাবে। তবে ইলিশ ধরে ঘাটে ফিরতে জেলেদের সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। আর তখনই বাজারে ইলিশ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
ফিশারিঘাটের পাশাপাশি শহরের দরিয়ানগর সৈকত, রেজু, ইনানী ও শামলাপুর সৈকতসহ অন্যান্য জেলেপল্লীতেও চলছে জোর প্রস্তুতি। দরিয়ানগর বোট মালিক সমিতির সভাপতি নজির আলম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই যাতে জেলেরা সাগরে নামতে পারেন, সেজন্য গত কয়েকদিন ধরেই চলছে জোর প্রস্তুতি।
জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি সূত্র জানায়, সাগরে মাছ ধরা বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে। ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। বিহিন্দি জালের বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে- যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। এছাড়া ককশিটের বোটগুলো প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরতে যায়।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে দেশে ইলিশের উৎপাদন প্রতিবছরই বাড়ছে। এতে জেলেসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই লাভবান হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।