জুমবাংলা ডেস্ক : লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় স্ত্রীদের নিয়ে ছেলেরা তাঁদের বৃদ্ধ মাকে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বৃদ্ধ মমেনা খাতুন (৬৬)। তিনি উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানটারী এলাকার সুলতান মিয়ার স্ত্রী।
থানায় করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, মমেনা খাতুনের ৩ ছেলের সবাই পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত জমি বণ্টন করে নিয়েছেন। বণ্টন সূত্রে মমেনা খাতুন ৯ শতাংশ জমির মালিকানা পান। সেই জমি চাষাবাদ করে মায়ের ভরণপোষণ দিতেন ছোট ছেলে আমিনুল ইসলাম। সম্প্রতি ছোট ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে সেই জমির তামাকখেত কেটে নেন বড় ছেলে মিজানুর রহমান। এ ঘটনায় ছোট ছেলে থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় সাক্ষী করা হয় মমেনা খাতুনকে।
বৃদ্ধ মা ছোট ছেলেকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের বর্ণনা পুলিশের সামনে তুলে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৭ মার্চ বিকেলে বড় ছেলে মিজানুর রহমান, তাঁর স্ত্রী পমিনা বেগম ও মেজ ছেলে মমিনুল ইসলাম মিলে বৃদ্ধ মাকে কাঠের লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করেন। এতে মমেনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।
পরে স্থানীয়রা মমেনা খাতুনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ৫ দিন চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। এরপর হামলাকারী দুই ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন মমেনা খাতুন।
ভুক্তভোগী মমেনা বলেন, পুলিশ তদন্ত করলেও আইনগত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুনরায় তাঁকে মারপিটসহ বাড়িছাড়া করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সন্তানদের মারধরে আঘাতের চিহ্নগুলো দেখিয়ে মমেনা খাতুন বলেন, ‘নিজে না খেয়ে সন্তানদের খাইয়েছি। সেই ছেলেরা আজ বউয়ের কথায় আমাকে এভাবে মারপিট করেছে। সেদিনের কথা মনে হলে এখনো বুকটা কাঁপে। অভিযোগ দিয়েছি, এ জন্য ছোট ছেলেকেসহ আমাকে বাড়িছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে আর কিছুই করছে না। যে সন্তানকে পেটে বুকে আগলে রাখতে নিজের শরীরের রক্ত পানি করেছি। সেই সন্তানের কারণে আজ বাড়িতেও থাকতে ভয় পাচ্ছি।’
অভিযুক্ত বড় ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি না, আমার স্ত্রী মাকে মারপিট করেছে। শাশুড়ি-বউয়ে ঝগড়ায় এমন হয়েছে। মায়ের মুখের ভাষা ভালো না, তাই বউ পিটুনি দিয়েছে। মা যেহেতু থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তাই মায়ের এখন আর খোঁজখবর নিচ্ছি না।’
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর বলেন, ‘অভিযোগটি তদন্তে অফিসার পাঠানো হয়েছিল। আপডেট খবর নিতে পারিনি। খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।