জুমবাংলা ডেস্ক : কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা সালিশের মাধ্যমে ফয়সালা করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা। ঘটনার পর চার অভিযুক্ত লাপাত্তা থাকলেও টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে প্রকাশ্যে আসেন তারা। এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনা শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে।
প্রায় ১৫ দিন আগে নানার বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিল ওই কিশোরী। পথ আটকিয়ে তাকে স্থানীয় একটি বাসায় নিয়ে যায় অভিযুক্ত চার ব্যক্তি। সেখানে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে তারা।
ঘটনাটি জানাজানি হলে কিশোরীকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এক পর্যায়ে কিশোরী গুরুতর অসুস্থ হলে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসাও করায় পরিবার। এ ঘটনার বিচার চাইতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার কিশোরীর পরিবার পড়ে বিপাকে। স্থানীয় সালিশকারীরা ঘটনার তিন দিন পর কিশোরীর বাড়িতেই সালিশে বসেন। চার অভিযুক্তকে সাত লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেন।
সালিশে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন জানান, সালিশে মেয়ের পরিবারের কাছ থেকেও আইনে যাবে না মর্মে মুচলেকাও আদায় করা হয়। এ ঘটনার ১০-১২ দিন পার হলে অভিযুক্তরা পালিয়ে ছিল তা প্রকাশ্যে আসে। এতে এলাকায় ব্যাপক প্রচার হয়।
শনিবার সকালে কিশোরীর মা বলেন, ‘আমি কার কাছে বিচার চাইব। ওপরওয়ালার ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আমার তো ইজ্জত-সম্মান আছে। তা ছাড়া আরো সন্তান আছে। তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সব বাদ দিয়েছি। এ ঘটনায় আমার আর কোনো অভিযোগ নেই।’
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরীর ভাই বলে ওঠেন, ‘আলম মিয়াই সব করছে।’ আলম কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হেও আছিঁন।’ কিশোরী কোথায় জানতে চাইলে তার মা বলেন, ‘হের অসুখ।’
অভিযুক্তদের একজন আব্দুল সালাম বলেন, ‘এইডা তো শেষ অইছে। চেয়ারম্যানই শেষ করছেন।’ আপনি তো জড়িত জানতে চাইলে সালাম বলেন, ‘হ আমারে জড়ায়ছে। মেয়েডার নিরপাত্তা দিতে গিয়া আমি ফাইস্যা গেছি।’ আর কারা ফাঁসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই ওয়াহেদ, জামান, ও আলম।’
সালিশে সভাপত্বি করেন স্থানীয় চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহাব উদ্দিন ভুইয়া। তিনি জানান, তিনি সালিশে উপস্থিত ছিলেন, তবে তিনি কোনো জরিমানা ধরেননি। অভিযুক্তদের বলা হয়েছিল তারা যেন মেয়ের পরিবারের সঙ্গে সমাঝোতা করে। তা ছাড়া আনুষঙ্গিক সব যেন করে। কোনো ঝামেলা যেন না হয়।
ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহম্মেদ জানান, তিনি অনেক পরে বিষয়টি শুনেছেন। তবে এ ঘটনাটি নিয়ে কাজ করছেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।