লাইফস্টাইল ডেস্ক : হিমেল রহমান আর ফারহানা শান্তা, দু’জনই চাকুরিজীবী। একজন বেসরকারি একটি অভিজাত কোম্পানিতে চাকুরি করেন, অন্যজন শিক্ষক। দু’জনে অফিস চলে গেলে বাসায় একাই থাকে মাত্র পাঁচ বছরের আহিয়ান শায়ন। ছুটির দিনে তাকে নিয়ে বাইরে বের হলে শান্তা খেয়াল করলেন, সে কারো সাথে মিশতে পারে না।
শায়নের মতো অনেক বাচ্চা আছে, যারা মিশতে পারে না। তারা সবার মধ্যে থেকেও নিজেকে আলাদা করে রাখে। এমনকি কথা বলতে বা নিজেকে প্রকাশ করতেও লজ্জা পায়। ছোটবেলা থেকেই আপনার সন্তানের এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। তা না হলে, বড় হলেও তারা একাকী রয়ে যাবে।
ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটা আসলে তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব। সেই কারণে তারা কিছু করতে গেলে ভয় পায়। তার এই ভয় দূর করতে পারলেই সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আপনাকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাকে দিতে হবে বন্ধুত্বের পাঠ। এটা খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। খুব সহজেই আপনি সন্তানকে অন্যের সাথে মিশতে সাহায্য করতে পারেন।
সবার আগে সমস্যা বুঝুন
আপনার প্রথম কাজ হলো বাচ্চার মনের ভেতর কী চলছে, সেটি বোঝা। সে কেন কারো সঙ্গে মিশতে চাইছে না, সেটি খুঁজে বের করুন। কেন সে অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন। তার আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ করুন। সেই মতো সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজুন। তাকে ধীরে ধীরে সকলের সাথে মিশতে শেখান।
বন্ধুত্ব করতে উৎসাহ দিন
বন্ধু তৈরির মাধ্যমে শিশু তার অনেক ধরনের জড়তার মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু তাকে আগে বন্ধুর গুরুত্ব সম্পর্ক ধারণা দিতে হবে। তবে বড়দের মতো করে জ্ঞান দিতে যাবে না। ছোটদের চিন্তা-ভাবনার পরিধির কথা মাথায় রেখে বোঝাতে হবে। সবার আগে নিজেই হয়ে উঠতে হবে বন্ধু। আপনার কাজগুলো যেন বন্ধুসুলভ হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ধীরে ধীরে বোঝাতে হবে বন্ধু মানে খেলার সঙ্গী, পড়ার সঙ্গী। দেখবেন সেও বন্ধু তৈরিতে কাজে লেগে পড়বে।
বন্ধুদের বাড়িতে ডাকুন
শিশুরা যা দেখে তাই শেখে। তাই বাচ্চাকে সঙ্গে করে নিজের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারতে যান। এমনকি নিজের বন্ধুদের বাড়িতেও ডাকতে পারেন। তাদের সঙ্গে আনন্দে কাটিয়ে দিন কিছুটা সময়। ব্যস, এই কাজটা সেরে ফেললেই সন্তান বন্ধুত্বের শিক্ষা পাবে। সে ধীরে ধীরে সকলের সঙ্গে মিশে যেতে চেষ্টা করবে। তার মধ্যেও ঝরে পড়বে আত্মবিশ্বাস। তাই ঝটপট এই কাজে লেগে পড়ুন।
তাকে নিয়ে মাঠে যান
এখন অনেকে শিশুকে ব্যস্ত রাখতে, স্মার্টফোন হাতে তুলে দেন। এই কাজটি ভুলেও করবেন না। এতে সে ধীরে ধীরে একাকীত্বের পথে হাঁটবে। তখন তাকে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা অনেকে কঠিন হতে পারে। তার বদলে তাকে নিয়ে মাঠে যান। সেখানে সমবয়সীদের সঙ্গে তাকে মিশতে দিন। সে হয়তো প্রথমে মানিয়ে নিতে সমস্যায় পড়বে। তবে আপনি পাশে থাকলে সে নিশ্চিত ভাবে পারবে। যার ফলে বাড়বে তার আত্মবিশ্বাস। এর পর সে নিজের থেকেই সমবয়সীদের সঙ্গে মিশতে পারবে।
এসবের পরও সন্তান যদি একা একা থাকতে চায়, তবে বুঝতে হবে কোথাও সমস্যা হয়েছে। সেক্ষেত্রে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার সব কথা শুনে, শিশুর সাথে কথা বলে সমস্যা বুঝে নেবেন। তারপর তিনি কিছু কাউন্সেলিং করানোর কথা বলতে পারেন। ব্যস, তা হলেই একাকীত্ব কাটিয়ে উঠতে পারবে সন্তান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।