জুমবাংলা ডেস্ক : দেড় যুগ পর বাড়ি ফিরলেন বাক প্রতিবন্ধী চান্দনা খাতুন। ২০০৫ সালে স্বামীকে খুঁজতে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
সব জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরিবারের সদস্যরা একরকম ভেবেই নিয়েছিল তিনি মারা গেছেন। বছরের প্রথম দিনে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে যশোর ট্রেন স্টেশনে দেখা মেলে তার। চান্দনাকে ফিরে পেয়ে পুরো পরিবারসহ গ্রামে চলছে আনন্দের বন্যা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চান্দনা খাতুন ঝিনাইদহের শৈলকূপার ফুলহরি ইউনিয়নের দেবী নগর গ্রামের মৃত মজিবর শেখের স্ত্রী। ঘটনা শুনতে অবাক লাগলেও হারিয়ে যাওয়ার দেড় যুগ পর বাড়ি ফিরেছেন ৭০ বছরের চান্দনা খাতুন। দুই ছেলে-মেয়ের জননী চান্দনা স্বামীকে খুঁজতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ২০০৫ সালে। আর ফিরে আসেননি বাক প্রতিবন্ধী চান্দনা।
চান্দনা খাতুনের চাচাতো-মামাতো ভাইয়েরা জানান, এক সঙ্গে খেলার সাথী আমাদের এই বোন। কী যে আনন্দ হচ্ছে তা ভাষায় প্রকার করার মতো না। ও বোবা। কোনো কথা বলতে পারে না। এরপর স্বামী হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে ওর মাথায় একটু গন্ডগোল হয়ে যায়। সবাইকে চিনতে পারছে আবার পারছে না।
একমাত্র ছেলে ফরিদ শেখ জানান, গত ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম দিনে পরিবারের এক আত্মীয় ডাক্তার দেখাতে যেয়ে যশোর রেল স্টেশনে তাকে দেখতে পান। হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজতে আমরা এমন কোনো প্রক্রিয়া নেই যা বাদ রেখেছি। যেমন- পত্রিকায় নিখোঁজ সংবাদ দেওয়া, বিভিন্ন থানায়, হাসপাতালে ও কবিরাজের কাছে পর্যন্ত গেছেন। কিন্তু কোথাও তাকে আর পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত এক প্রকার হাল ছেড়ে দেন সন্তানরা। তারা ভেবেই নিয়েছিল তিনি মারা গেছেন। এখনকার গল্প শুধুই বাধভাঙা আনন্দের।
একমাত্র মেয়ে ঝর্না খাতুন জানান, যার বাবা-মা নেই তারাই জানে কষ্টটা কেমন। মাকে শুধু খুঁজতাম। এখানে-ওখানে, যেখানে যেতাম সেখানেই কোনো বয়স্ক মহিলা দেখলেই মনে হতো এই বুঝি মাকে পেয়ে গেলাম। এখন মায়ের বাড়ি আসার খবর জানাজানি হলে গ্রামবাসীসহ পুরো এলাকার মানুষ দলে দলে এক নজর দেখতে ভিড় করছে বড় ভাইয়ের বাড়িতে।
চান্দনা খাতুন কেমন আছেন জানতে চাইলে, মাথা নেড়ে জবাব দেন খুব ভালো আছেন। হাত নেড়ে জানান দেন, আর বাড়ি ছেড়ে যাবেন না। দুই সন্তানকে বুকে টেনে নেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।