আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হওয়ায় স্বর্ণ কেনার দিকে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর একক মাস হিসেবে মার্চে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে স্বর্ণের দাম। এর প্রভাবে পড়েছে চীনা বাজারেও। দাম আরও বাড়তে পারে — এ আশায় স্বর্ণ কেনা বাড়িয়েছেন চীনা ক্রেতারা।
চলতি বছরেই সুদহার কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণ কেনায় ঝুঁকছেন মার্কিন বিনিয়োগকারীরা। এর প্রভাবেই তেজিভাব দেখা যাচ্ছে স্বর্ণের বৈশ্বিক বাজারে।
গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জের লেনদেনে সোম (২৫ মার্চ) থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) টানা চারদিন বাড়ে মূল্যবান এ ধাতুর দাম। এর মধ্যে টানা দুদিনের লেনদেনে দামের রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ। প্রতি আউন্সের দাম ওঠে ২ হাজার ২৩৮.৪০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, নিউ ইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে মার্চ মাসে স্বর্ণের দাম প্রায় ৮ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর একক মাসে এটি সর্বোচ্চ দর বাড়ার রেকর্ড।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মার্চের শুরু থেকে স্বর্ণের দাম বাড়ছে চীনের খুচরা বাজারে। শনিবার (৩০ মার্চ) দেশটির অনেক জুলেয়ারি দোকানে প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৭০০ ইউয়ান বা প্রায় ৯৮ ডলার।
চীনের স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার বিষয়ে বেইজিংয়ের একটি জুয়েলারি কোম্পানির সিনিয়র গোল্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যানালিস্ট লি ইয়াং বলেন, এ বছরের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ ৯.৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। যার প্রভাবে স্থানীয় বাজারে মার্চে স্বর্ণের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে। যা প্রায় ৫০ ইউয়ান। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এবং শুক্রবার (২৯ মার্চ), বিশেষ করে শুক্রবার বেইজিংয়ে প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম ১১ থেকে ১২ ইউয়ান বেড়েছে।
স্বর্ণের চড়া দাম থাকা সত্ত্বেও অনেক চীনা ক্রেতাই স্বর্ণের বার বা গহনা কেনাকাটা করছেন। যদিও তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বর্ণের দামের এমন ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বর্ণের প্রতি ভোক্তাদের এক ধরনের বাড়তি আকর্ষণ দেখা দেয়। অনেকেই চড়া দাম থাকার সত্ত্বেও মূল্যবান এ ধাতুটি কেনা বাড়িয়ে দেন। কারণ তারা মনে করেন, দাম যেহেতু ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে, তাহলে তা হয়তো আরও বাড়বে।
অবশ্যই কেউ কেউ সতর্ক অবস্থানেও থাকেন। মূলত নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবেই স্বর্ণের প্রতি ঝুঁকছেন ক্রেতারা।
এদিকে, দেশের বাজারেও উঠানামার মধ্যে রয়েছে স্বর্ণের দাম। গত ১৯ মার্চ সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৭৫০ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এটি কার্যকর হয় ২০ মার্চ।
তবে মাত্র একদিনের ব্যবধানে ২১ মার্চ দাম ভরিতে ২ হাজার ৯১৬ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
উল্লেখ্য, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।