লাইফস্টাইল ডেস্ক : শীতের তেজ বাড়ছে। খাওয়া-ঘুম, জীবনযাপনের রুটিনে এসেছে পরিবর্তন। এসময় খাবারের দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এসময় ঠান্ডা জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। যে খাবারগুলোতে শরীর গরম থাকে সেগুলো খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঠান্ডা থেকে বাঁচতে মধু, তুলসী পাতা, গোলমরিচ, রসুনের ব্যবহার করেন অনেকে। তবে সবটাই করতে হবে শরীর বুঝে। শীতকালে শরীর সুস্থ রাখতে কী কী খাবেন চলুন দেখে নেয়া যাক-
১. চা – শীতের সকালে গ্রিন টি, তুলসি টি, অথবা আদা চা-এর উপকারিতা রয়েছে। এতে যেমন ক্লান্তি দূর হয় তেমনি শরীরও সতেজ থাকে। রুটি- লাল আটার রুটিতে রয়েছে ফাইবার এবং ভিটামিন বি । ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে শরীরে উষ্ণ ভাব এনে দেয়। ভিটামিন বি শরীরকে উষ্ণ রাখে।
২. ডিম – ডিম খেতে সবাই ভালবাসে। সিদ্ধ হোক বা পোচ প্রোটিন সমৃদ্ধ এই খাবার প্রতিদিন সকালের নাস্তায় রাখেন। ডিমে প্রোটিন ছাড়াও ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ওমেগা-৩ রয়েছে। মিক্সড ভেজিটেবল- মিক্সড ভেজিটেবলে প্রায় সব ধরনের ভিটামিন, মিনারেলস, ফাইবার থাকে যা বিভিন্ন রোগের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। ত্বকের লাবণ্য ফিরে আনতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
৩. স্যুপ – প্রতিদিন সকালে না হলেও শীতের দিনে যে কোনও একটা সময়ে স্যুপ খান। এতে শরীরে শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ঠান্ডা দূর করে এবং ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখে। আবার শীতকালে গরম গরম স্যুপ খেতেও ভালো লাগে।
৪. মৌসুমি ফল – প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মৌসুমি ফল অবশ্যই রাখুন। যাদের কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা কলা খেতে পারেন।
৫. মধু – শীতকালে মধুর কোনও বিকল্প নেই। গলার খুসখুস কমানোর পাশাপাশি মধু ঠান্ডা দূর করে। সেই সাথে শরীর উঞ্চ রাখে মধু।
৬. দুধ – প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দুধ অবশ্যই রাখুন। দুধে যে প্রোটিন থাকে তা শরীরের জন্য উপকারী। কর্নফ্লেক্স- সকালের নাস্তায় মাঝে মধ্যে কর্নফ্লেক্স খান। তার মধ্যে ফল মিশিয়েও খেতে পারেন।
৭. ব্রাউন ব্রেড – সাদা ব্রেডের থেকে ব্রাউন ব্রেড অনেক বেশি উপকারী। তাই সাদা ব্রেড ভুলে ব্রাউন ব্রেড খান। ওটস- ওটস খাওয়া শরীরের পক্ষে খুবই ভালো।
৮. ওটস – অনেক ভাবেই খেতে পারেন। দুধ দিয়ে, খিচুড়ি করে যেটা ভাল লাগে সেভাবেই খেতে পারেন। শীতকালে অবশ্যই মাখন খান। মাখন দিয়ে হালকা টোস্ট করে খেতে পারেন।
৯. দুধ – ভিটামিন বি৬-এর অন্যতম ভালো উৎস হলো দুধ। তরল দুধ পান করতে পারেন অথবা প্রতিদিনের নাস্তার সঙ্গেও যোগ করতে পারেন। দুধের সঙ্গে ওটস বা কর্নফ্লেক্স মিশিয়ে খেতেও ভালো লাগবে। পুষ্টিকর এই খাবার সব বয়সীদের জন্যই উপকারী।
১০. পালং শাক – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শীতে সুস্থ থাকতে পালং শাক খেতে পারেন। পুষ্টিতে ভরপুর পালংয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যানসার প্রতিরোধী গুণের কারণে এটি ‘সুপারফুড’ হিসেবে পরিচিত। সবুজ পাতার এ শাক দ্রুত পেটের চর্বি কমাতে পারে। পালংয়ে ভিটামিন ও মিনারেল আছে, এতে ক্যালরি থাকে কম।
১১. আদা – আদায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা মতে, আদা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সাপোর্ট করে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। তরকারিতে বা চায়ে গোটা আদা ব্যবহার সবচেয়ে উপকারী।
১২. রসুন – স্বাস্থ্যের উপকার বিবেচনায় শত শত বছর ধরে রসুনের ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি হৃদরোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ফ্লু ও ঠান্ডাজ্বরে উপকারী বলে ধারণা করা হয়। রসুনে বিদ্যমান অ্যালিসিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং ইমিউন সিস্টেমকে সহায়তা করে।
১৩. পুদিনা – শরীর ভালো রাখতে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে মিন্ট বা পুদিনার রস খাওয়া যেতে পারে। পুদিনা পাতা ভালো করে ধুয়ে চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের স্যালাদ, জুস বা চাটনিতে ব্যবহার করা যেতে পারে পুদিনা। কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, মুখের দুর্গন্ধ, ঠান্ডা লাগা, অবসাদসহ একাধিক সমস্যায় কাজে দেয় পুদিনা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময় শরীরকে হাইড্রেট রাখাটা জরুরি। শরীরকে হাইড্রেট না রাখলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, দেহের তাপমাত্রার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন শীতে ডায়েটের সময় খাবার তালিকায় যেন এমন খাবার থাকে, যেগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে সংক্রমণকে সহজেই প্রতিঘাত করতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।