আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাড়ির সংখ্যায় লাগাম টানতে একাধিক পদক্ষেপের মাঝে সিঙ্গাপুরে বেড়েছে মালিকানা সনদের খরচ। যা প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। এক লাখ ছয় হাজারের ডলারের এ খরচে যুক্তরাষ্ট্রে চারটি টয়োটা ক্যামরি হাইব্রিড কেনা যায়।
দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, মহামারী পরবর্তী পুনরুদ্ধারের কারণে দেশটির গাড়ির খরচ বেড়ে গেছে। সর্বকালের সর্বোচ্চ অবস্থায় রয়েছে কোটা ব্যবস্থা।
গাড়ির মালিকানার ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের ১০ বছরের ‘সার্টিফিকেট অব এনটাইটেলমেন্ট’ বা সিওএ ব্যবস্থা রয়েছে। যা বিডিংয়ের মাধ্যমে অর্জন করা যায়। ছোট এ নগররাষ্ট্রে গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে ১৯৯০ সালে এ নিয়ম প্রবর্তিত হয়।
সিঙ্গাপুরে ৫৯ লাখ মানুষের বসবাস। আর পুরো দেশ ঘুরে আসতে গাড়িতে এক ঘণ্টারও কম সময় লাগে।
কোটা ও বিডিং প্রক্রিয়া মিলিয়ে সিঙ্গাপুরকে গাড়ি কেনার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর বানিয়েছে। ২০২০ সালে তুলনায় সনদের দাম চারগুণ বৃদ্ধির ঘোষণা আসে গতকাল বুধবার (৪ অক্টোবর)।
সিওই, রেজিস্ট্রেশন ফি ও ট্যাক্সসহ বর্তমানে একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড টয়োটা ক্যামরি হাইব্রিডের দাম পড়ে এক লাখ ৮৩ হাজার ডলার, স্থানীয় মুদ্রায় দুই লাখ ৫১ হাজার ৩৮৮ সিঙ্গাপুরি ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্রে এ গাড়ির দাম ২৮ হাজার ৮৫৫ ডলার।
অবশ্য সিঙ্গাপুরে আবাসন খরচেও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে বেশি। সরকারি ভর্তুকিযুক্ত একটি ছোট ফ্ল্যাটের দাম প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার।
২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে সিঙ্গাপুরে গাড়ি চালানোর হার কমে যায়। তখন সিওইর দাম ৩০ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলারে নেমে আসে, বর্তমানে যা এক লাখ ৪৬ হাজার দুই সিঙ্গাপুরি ডলার।
কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির ফলে গাড়ি কেনার পরিমাণ বাড়লেও সিঙ্গাপুরে মোট যানবাহনের সংখ্যা প্রায় সাড়ে নয় লাখে সীমাবদ্ধ। এছাড়া নতুন সনদপ্রাপ্তি নির্ভর করে কতগুলো পুরানো গাড়ি নিবন্ধনমুক্ত করা হয়েছে তার ওপর।৷
সনদ ও কোটার কারণে গাড়ির খরচ বেড়ে যাওয়ায় মধ্যম আয়ের সিঙ্গাপুরবাসীদের নাগালের বাইরে রয়ে যাচ্ছে গাড়ি। দেশটিতে একটি পরিবারের গড় বার্ষিক উপার্জন এক লাখ ২১ হাজার ১৮৮ সিঙ্গাপুরি ডলার।
ক্রমাগত মূল্যস্ফীতি ও মন্থর অর্থনীতির কারণে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন সময়ে মুনাফার আশায় সনদের দাম কম থাকার সময় কেনা গাড়ি অনেকে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
৪০ বছর বয়সী বিমা এজেন্ট জ্যাসন গুয়ান জানান, সিওই খরচসহ ২০০৮ সালে ৬৫ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলারে একটি টয়োটা রাশ কেনেন। বর্তমানে গাড়ি ছাড়াই আছেন তারা। নিজস্ব পরিবহনের বদলে পরিবারের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দিকে মনোযোগ তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।