আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরে বিটকয়েন বৈধ ও অতিমাত্রায় প্রচলিত। কিন্তু সম্প্রতি যে হারে বিটকয়েনের দাম পড়তে শুরু করেছে, এতে বিপদের মুখে পড়েছে এল সালভাদর।
কাঁচাবাজার করা, রেস্টুরেন্টে বিল দেয়া, বাড়ি-গাড়ি কেনা কিংবা আর্থিক যেকোনো লেনদেনে এল সালভাদরের মানুষের কাছে বিটকয়েনের ব্যবহার ডালভাত। নয় মাস আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে দেশটির সর্বত্র বিটকয়েনের ব্যবহার বৈধ করে দেন। এতে ডলারের পাশাপাশি এ ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা দেশের বাজারে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
তবে বিটকয়েনের দাম পড়ে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটির সরকার। বেশ কয়েক দিন আগে দেশটির সরকার ১০০ মিলিয়ন ডলারের বিটকয়েন ক্রয় করে। প্রতিটি বিটকয়েনের দাম ৩০ হাজার ৭৪৪ মার্কিন ডলার ধরে মোট ৫০০টি বিটকয়েন কেনে সরকার।
দেশটির অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, এল সালভাদরের ডিজিটাল কোষাগারে বর্তমানে ২ হাজার ৩০০টি বিটকয়েন রয়েছে। তবে কয়েনের দাম পড়ে যাওয়ায় বাজারে এর মূল্যমান অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ ব্যাপারে দেশটির সরকার বলছে, ‘ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারে ন্যূনতম কিছু ঝুঁকি থাকবেই। সেগুলো সামলে নিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে হবে।
এল সালভাদরকে বলা হয় বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ, যেখানে ডিজিটাল মুদ্রা সর্বত্র প্রচলিত ও বিনিময়যোগ্য। ২০১৯ সালে দেশটির এল জন্তে শহরে নাম না জানা একজন প্রথম বড় অঙ্কের (৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার মূল্যমান) বিটকয়েন দান করেন। ইন্টারনেট মাধ্যমে কে বা কারা প্রথম এল সালভাদরকে বিটকয়েন দিয়েছিল, তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
এল সালভাদরের এল জন্তে শহরকে বলা হয়ে থাকে ‘বিটকয়েনের শহর’। বিশ্বের যেসব দেশে বিটকয়েন বৈধ, সেখানে শুধু অনলাইন কেনাকাটার জন্য এই ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এল সালভাদর একেবারে ভিন্ন। অনলাইন-অফলাইন সবখানেই এল সালভাদরে ব্যবহৃত হয় বিটকয়েন।
দেশ থেকে কাগুজে মুদ্রা তুলে নেয়া হবে কি না–এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট বুকেলে বলেন, ‘আমরা কাউকে জোর করছি না। এখানে এখনো ডলারের আধিপত্য রয়েছে।’
একটি দেশের জন্য বিটকয়েন ব্যবহার করা কতটুকু নিরাপদ–এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল জানিয়েছে, ‘বিটকয়েনের মতো ডিজিটাল মুদ্রাগুলোর মান অনেক বেশি ওঠানামা করে। এতে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। একই কথা বলেছেন এল সালভাদরের অর্থনীতিবিদ তাতিয়ানা মারোকুইন। তিনি বলেন, ‘একটি দেশের সরকার কখনোই জনগণের কষ্টের টাকা ডিজিটাল মুদ্রায় বিনিয়োগ করে বড় রকমের ঝুঁকি নিতে পারে না। এ ছাড়াও আমরা জানি না সরকার কবে, কখন, কোন খাতের অর্থ দিয়ে এসব মুদ্রা কিনছে। সিদ্ধান্তগুলো ঝুঁকিপূর্ণ।’
এদিকে বিটকয়েনের মান পড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এল সালভাদরের পর্যটনমন্ত্রী মোরেনা ভালদেজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। দেশের জনগণও তার ওপর ভরসা করে। আশা করছি, আমাদের অর্থনীতি সুষম গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’
সূত্র: বিবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।