জুমবাংলা ডেস্ক : স্পেশাল ক্লাসের কথা বলে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিসিএস কনফিডেন্সের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে।
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ও ত্রিশাল বাজারে বিসিএস কনফিডেন্সের শাখা পরিচালনা করে আসছে মেহেদী হাসান। এবার স্পেশাল ক্লাসের কথা বলে ৫০ এর অধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সম্পূর্ণ কোর্স না করিয়ে কোচিংও বন্ধ করে দিয়েছেন মেহেদী হাসান। ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে সবার সাথে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ করেছে একাধিক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার জানান, আমি গত জুন মাসে বিসিএস কনফিডেন্স জাককানইবি শাখায় ভর্তি হই স্পেশাল ব্যাচে। আমি এগারো হাজার দুইশ টাকা দিয়ে ভর্তি হই। প্রথমদিকে দু-একমাস ভালোই ছিল। কিন্তু তারপরে হঠাৎ করে কোরবানি ঈদের পরে দেখি তাদের সার্ভিস খুবই খারাপ। ক্লাস হয় আবার হয়না। নভেম্বরের এক তারিখ থেকে কোচিং-এর ক্লাস পুরো দমে বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের যে শিটগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলোও পুরাতন। আমাদের স্পেশাল ব্যাচের হটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল। সেগুলো গ্রুপ থেকেও আমাদের বের করে দিছে। তিনি আমাদের টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।
স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেহানা চৈতি বলেন, আমি দশ হাজার দুইশ টাকা দিয়ে ভর্তি হইছি। ভর্তি হওয়ার সময় তিনি (মেহেদী হাসান) বলেছিল এক্সট্রা ক্লাস, এক্সট্রা পরীক্ষা, স্পেশাল অনেক কিছুই আছে৷ কিন্তু নরমাল ক্লাসও আমরা পাই নাই। আমি প্রথমে অর্ধেক টাকা দিছিলাম। কিন্তু পরে বাকী অর্ধেক টাকার জন্যও চাপ দিতে থাকে। টাকা না দিলে ভর্তি আইডি অফ করে দেওয়ার কথা বলে প্রেশার দেয়। সেজন্য বাধ্য হয়ে পুরো টাকা দিতে হয়। কিন্তু পরে আর কোনো সার্ভিস দেয় নাই।
অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম হোসেন বলেন, সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ বিসিএস কনফিডেন্স ত্রিশাল শাখায় ৪৭তম বিসিএস প্রস্তুতি ফুল কোর্সে সাত হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হই। এক মাসের ভেতর শিট প্রদান ও ক্লাস নেওয়ার কথা বললেও কোনো শিট দেওয়া হয়নি এবং নিয়মিত ক্লাস নেয় নি তারা। উপরন্তু নিম্নমানের টিচার দিয়ে ক্লাস নিয়েছে। হঠাৎ নভেম্বরে বন্ধ করে দেওয়া হয় সকল ক্লাস। পরিচালক মেহেদী ভাই বলেন, বাকি টাকা ব্যাক দিবে কিন্তু পরবর্তীতে সে গ্রুপ থেকে আমাদের রিমুভ করে দেয়। অনেকের কাছে তারা দশ হাজার থেকে বারো হাজার টাকা নিয়েছে। ছয়-সাত মাস ক্লাস করানোর কথা থাকলেও আড়াই মাস ক্লাস করিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোচিং-এর ম্যানেজার সজল ভাইও এবিষয়ে কোনো দায় নেয় নি। মেহেদি ভাই যদি দ্রুত এর কোনো সমাধান না দেয় তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করব।’
পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তুমেল তঞ্চঁঙ্গ্যা জানান, মেহেদী ভাই আমার পরিচিত হওয়ার সুবাদে এখানে এগারো হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হই। আমাদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার আশ্বাস দেওয়া হয়। টিচারদের সার্ভিস অত্যন্ত বাজে ছিলো। উনাদের বিসিএস কনফিডেন্স গ্রুপ থেকে আমাদের রিমুভ করে দিয়েছে। মেহেদী ভাইয়ের থেকে আমরা প্রতারিত হয়েছি।
তবে এই বিষয়ে মেহেদী হাসানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে বিসিএস কনফিডেন্সের প্রধান শাখায় জানতে চাইলে তারা জানান, আমরা এ বিষয়ে অবগত এবং আমরাও অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।