আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অফিশিয়াল নাম ‘কানাডিয়ান প্যাসিফিক ২৮১৬’ হলেও এই ট্রেনের ডাকনাম ‘এমপ্রেস’ বা সম্রাজ্ঞী। কয়লা পুড়িয়ে বাষ্পচালিত এই ট্রেন তৈরি হয়েছিল ১৯৩০ সালে। এ ধরনের বাষ্পচালিত ট্রেন আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থায় এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এমপ্রেস নামের ট্রেনটিও তার জীবনের শেষ যাত্রায় রয়েছে এখন।
গত এপ্রিলে কানাডার ক্যালগারি থেকে একটি প্রদর্শনীমূলক যাত্রা শুরু করেছিল ট্রেনটি। পরে এটি কানাডার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে সম্প্রতি মেক্সিকোতে প্রবেশ করে। শুক্রবার এই ট্রেনটি মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে পৌঁছানোর কথা থাকলেও এর আগেই ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ট্রেনটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে মেক্সিকোতে পৌঁছানোর পর গত সোমবার দেশটির হিদালগো রাজ্যের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। ঐতিহ্যবাহী এই ট্রেন দেখার জন্য সেদিন হিদালগোর অনেক মানুষ ট্রেন লাইনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ট্রেনটি যখন আসছিল তখন এটিকে পেছনে রেখে অনেকেই সেলফি তুলছিলেন। কিন্তু এই সেলফি তুলতে গিয়েই মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে এক মেক্সিকান নারীর।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রেনটিকে আসতে দেখে সেলফি তোলার অভিপ্রায় নিয়ে রেললাইনের খুব কাছেই মোবাইল ধরে বসে ছিলেন ওই নারী। কিন্তু তিনি আসলে মাপে ভুল করেছিলেন। ট্রেনটি পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এর একটি কোনা সজোরে আঘাত করে তাঁর মাথার পেছনের অংশে। সঙ্গে সঙ্গেই মুখ থুবড়ে পড়ে যান তিনি। কেউ একজন তাঁকে টেনে তোলার চেষ্টা করলে দেখা যায়, মুহূর্তের মধ্যেই নিথর হয়ে গেছে তাঁর শরীর।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আরও অনেকের সঙ্গে ৩০ বছরের কম বয়সী ডুলসি অ্যালোন্দ্রা নামের ওই নারীও ট্রেনটি দেখতে এসেছিলেন। কাছাকাছি একটি স্কুল থেকে তিনি তাঁর ছেলেকেও নিয়ে এসেছিলেন বাষ্পচালিত ট্রেন দেখানোর জন্য। ট্রেনের আঘাতে ছেলের সামনেই প্রাণ হারান তিনি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাষ্পচালিত এমপ্রেস ট্রেন তার যাত্রা শেষ করে আগামী জুলাইয়ে ফিরে যাবে কানাডায়। সেখানেই এটি চিরদিনের জন্য অবসরে চলে যাবে।
ট্রেনটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘কানাডিয়ান প্যাসিফিক ক্যানসাস সিটি কোম্পানি’ এক বিবৃতিতে মর্মান্তিক ওই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তও দাবি করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলন্ত এই ট্রেনটিকে যারাই দেখতে চাইবেন, তারা রেল লাইন থেকে অন্তত ১০ মিটার দূরত্বে অবস্থান করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।