আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে চলমান শ্রম ঘাটতি দূর করতে বিভিন্ন দেশের দক্ষকর্মীদের ও প্রতিভাবানদের কাছে টানতে চায় ইউরোপীয় কমিশন। জনসংখ্যাগত পরিবর্তন, বয়স্ক ও অবসরে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, জন্মহার কম থাকায় ইউরোপের শ্রমবাজারের চ্যালেঞ্জ আগামীতে আরো বেড়ে যাবে বলে উদ্বেগ রয়েছে ইইউ কমিশনের।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ইউরোপে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা কমে হবে ২৫ কোটি ৮০ লাখ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৫০ লাখে। এজন্য নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এই উদ্যোগের সুফল নেয়ার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশি নাগরকিদেরও। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশে বিভিন্ন খাতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। ২০২২ সালে পুরো ব্লক জুড়ে চাকরির শূন্যপদের হার বেড়ে ২.৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই হার এক দশক আগের অর্থাৎ ২০১২ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। গত ১৫ নভেম্বর ইউরোপীয় কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, ইইউ ট্যালেন্ট পুল এর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাকরিদাতা ও তৃতীয় দেশের চাকরিপ্রার্থীদের প্রত্যাশার মেলবন্ধন ঘটবে।
এতে বলা হয়েছে, এটি হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম অনলাইন একটি প্ল্যাটফর্ম।
যেসব খাতে কর্মী সংকট রয়েছে সেসব বিষয়গুলোর উপর ফোকাস করবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি। এর মাধ্যমে জোটভুক্ত দেশগুলোর বাইরে থাকা চাকরিপ্রত্যাশীদের বৃত্তান্ত এবং জোটের নিয়োগকর্তাদের চাকরির শূন্যপদ একে অপরের কাছে তুলে ধরবে।
ইউরোপীয় কমিশনের স্বরাষ্ট্র ও অভিবাসন বিষয়ক কমিশনার ইলভা ইয়োহানসন বলেন, ‘‘আইনি পথে অভিবাসনের সুযোগ তৈরি করা হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন অভিবাসন ও আশ্রয় নীতিমালার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। ফলে এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে অ-ইউরোপীয় দেশের নাগরিকদের চাকরি খোঁজার যেমন সুযোগ তৈরি হলো, ঠিক তেমনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাকরিদাতারাও দক্ষ কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে শ্রম ঘাটতি দূর করতে পারবেন। এদিকে ইউরোপের শ্রমবাজারের চ্যালেঞ্জ আগামীতে আরো বেড়ে যাবে বলে উদ্বেগ রয়েছে ইইউ কমিশনের।
গ্রিন ট্রানজিশনকে প্রত্যাশিত ধরে কমিশন জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ ৫০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
ডিজিটাল ট্রানজিশনের অংশ হিসেবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক দুই কোটি জনবলের মধ্যে এক কোটি ১০ লাখ মানুষের ঘাটতি রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই শূন্যপদগুলো পূরণের কথা ভাবা হচ্ছে। অন্তত ৪২টি খাতে ইউরোপজুড়ে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বীকার করেছে যে, ‘‘ইইউ-এর বাইরে অর্জিত যোগ্যতার স্বীকৃতি দক্ষ কর্মী খোঁজার কাজকে যেমন সহজ করে, তেমনি তৃতীয় দেশ থেকে ইউরোপের চাকরির বাজারে আবেদন প্রক্রিয়া ও ইউরোপীয় সমাজে একীভূত হওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক হয়।
২০২২ সালে দেয়া ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণেও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লিয়েন এসব নতুন উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন৷ তিনি বলেছিলেন, ইউরোপকে দক্ষ কর্মীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হতে হবে৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।