জুমবাংলা ডেস্ক : নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় দেশে প্রথম চাষ হচ্ছে নতুন ফসল “বাউ চিয়া”। এই ফসল চাষে বিঘায় ফলন হবে ৪০ থেকে ৫০ কেজি। যা প্রতি কেজি বিক্রি হবে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের শাহ্ পাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতাংশ জমিতে বাউ চিয়ার চাষ করেছেন। ফসলও আশানুরূপ হয়েছে। বাজারে সুবিধা পেলে আগামিতে আরও বেশি জমিতে উচ্চমূল্যের এ ফসল চাষ করব। ২০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। যা ফলন হবে ৪০ থেকে ৫০ কেজি। ৬শ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হবে। রোগবালাই, পরিচর্যা কম যা অন্য ফসলের চেয়ে দ্বিগুণ লাভ।
মূলত মেক্সিকো ও আমেরিকার উচ্চ পুষ্টিতে ভরপুর ও মানবদেহের অত্যন্ত কার্যকরী বিভিন্ন রোগের ঔষধিগুণ সম্পন্ন সুপারসিড নতুন ফসল “চিয়ার” এই প্রথম চাষ হচ্ছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া চিয়া চাষে উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের মাঝে এক নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নতুন এ ফসল এদেশে চাষাবাদে উপযোগী জাত উৎপাদন করে নাম দিয়েছেন বাউ চিয়া।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, চিয়া মানে শক্তি, চিয়া হলো দানা জাতীয় খাদ্য এবং তার মধ্যে ১০ প্রকার ঔষধিগুণ বিদ্যমান আছে। যা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস প্রতিরোধসহ হার্ড স্টক মতো বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উচ্চ পুষ্টি ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন নতুন এ ফসলের চাষাবাদ ছড়িয়ে পড়লে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। আর এ ফসলের ব্যাপক চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার তুষার কান্তি রায় জানান, চিয়া একটি ভোজ্য বীজ যা পুদিনা পরিবারের (লামিয়াসেই) মধ্য ও দক্ষিণ মেক্সিকো, বা দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকো সম্পর্কিত সালভিয়া কলম্বিয়ারিয়া ফুলের একটি উদ্ভিদ। চিয়া বীজ ডিম্বাকৃতি ও ধূসর বর্ণের সাথে কালো এবং সাদা দাগযুক্ত এবং ব্যাস প্রায় ২ মিলিমিটার (০.০৮ ইঞ্চি)।
ময়মনসিংহ থেকে বীজ সংগ্রহ করে ওই কৃষকের মাঝে সরবরাহ করা হয়। চিয়া সাধারণত একটি তিল ও রাই সরিষার শস্যদানার মতো। ফসলটি দেশীয় পদ্ধতিতে সারিবদ্ধ কিংবা বীজ ছিটিয়ে চাষাবাদ করা যায়। চিয়া সাধারণত একটি রবি মৌসুমের তিন মাসের ফসল। অক্টোবর মাসে বীজ রোপণ করতে হয়। গম বা সরিষার মতো মাড়াই করে, যথাযথ চালুনি, মশারীর কাপড়, কুলা ইত্যাদি ব্যবহার করে সহজে বীজ পরিস্কার করা যায়।
তিনি আরও জানান, মেক্সিকোসহ ইউরোপের দেশগুলোতে চিয়া একটি ঔষধি ফসল হিসাবে চাষ হয়। সেখানকার প্রাচীন আদিবাসী অ্যাজটেক জাতির খাদ্য তালিকায় থাকা চিয়া সিড বা বীজকে তারা সোনার থেকেও মূল্যবান মনে করতেন। তারা বিশ্বাস, করতেন এটা তাদের শক্তি ও সাহস জোগাবে। চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক এবং ক্যাফিক এসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিরপেক্ষ স্বাদের কারণে চিয়া সব ধরনের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত। সূত্র : এগ্রিকেয়ার২৪.কম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।