জুমবাংলা ডেস্ক : স্বল্প আয়ের ১ কোটি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয়ের জন্য পৃথক দুটি দরপত্রের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১ কোটি ২০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল (সয়াবিন তেল) কেনার উদোগ নিয়েছে ‘ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’ (টিবিবি)। এতে মোট ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য টিসিবির সয়াবিন তেল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ লিটার। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত মোট ৩ কোটি ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয়েছে। এ অবস্থায় সংস্থার চলমান ক্রয় পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে দুটি প্রথক দরপত্রের মাধ্যমে ১ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে পুনঃদরপত্রের মাধ্যমে ৮০ লাখ লিটার এবং নতুন একটি দরপত্রের মাধ্যমে আরও ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে।
সূত্র জানায়, দুই লিটার পেট বোতলে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে গত ১৬ আগস্ট স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত পুনঃ দরপত্র (জাতীয়) আহ্বান করা হয় এবং এর বিপরীতে তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। তিনটি দরপত্রই রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে মেঘনা এডিবল অয়েলস রিফাইনারি লিমিটেড। অগ্রিম আয়কর, মূসক ও টিসিবির গুদামে পরিবহনসহ প্রতি লিটার সয়াবিনের ক্রয়মূল্য হবে ১৬১ টাকা ৯৪ পয়সা। তবে শুধু তেলের প্রকৃত দর হচ্ছে প্রতি লিটার ১৫৬ টাকা ৭০ পয়সা।
সূত্র জানায়, টিসিবির ক্রয় প্রস্তাবে প্রতি লিটার সয়াবিনের প্রাক্কলিত দর হচ্ছে ১৭১ টাকা ৩২ পয়সা। সে হিসেবে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে প্রস্তাবিত দর প্রতি লিটারে ৯ টাকা ৩৮ পয়সা কম। তবে পর্যালোচনায় দেখা যায়, টিসিবি কর্তৃক স্থানীয় বাজার থেকে কেনা তেলের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এর আগে সর্বশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা ৩০ পয়সা দরে কেনা হয়েছিল। সে হিসাবে এবার প্রতি লিটারে ১ টাকা ৬৪ পয়সা বেশি পড়ছে। এরও আগে গত ৩০ আগস্ট প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৫৯ টাকা ৮৫ পয়সা দরে কেনা হয়েছিল।
সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের গড় খুচরা মূল্য হচ্ছে ১৭২ টাকা ৫০ পয়সা। সে হিসাবে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে দাম কম পড়ছে ১০ টাকা ৫৬ পয়সা।
জানা গেছে, সয়াবিন তেল সরবরাহের অপর দুটি দরপত্র ছিল সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড এবং সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড-এর। এর মধ্যে সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড-এর প্রস্তাবিত দর ছিল প্রতি লিটার ১৬৩ টাকা ৭৩ পয়সা এবং সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড-এর প্রস্তাবিত দর ছিল প্রতি লিটার ১৬৩ টাকা ৯০ পয়সা।
সূত্র জানায়, ভোজ্যতেলের বাজার স্বল্পআয়ের মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকার টিসিবির মাধ্যমে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য স্বল্প দামে বিক্রি করছে। এরই অংশ হিসেবে স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে আরও ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করা হবে।
স্থানীয়ভাবে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এর মধ্যে সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৫৮.৫৫ টাকা দর উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড প্রতি লিটারের দাম ১৫৮.৮২ টাকা এবং মেঘনা এডিবল অয়েলস রিফাইনারি লিমিটেড প্রতি লিটারের দাম ১৬১.৯৪ টাকা উল্লেখ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশে সর্বসিনম্ন দরদাতা সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৭৯ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ এক কোটি লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে সরকারের মোট ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। প্রতিষ্ঠান দুটি ২ লিটারের পেট বোতলে এই এক কোটি ৩০ লাখ লিটার তেল টিসিবির গুদামে সরবরাহ করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।