জুমবাংলা ডেস্ক : চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে ফেসবুকে ২০১৭ সালের জুনে পরিচয় ছিল ঢাকার এক নারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার। মাত্র সাত দিনের মধ্যে মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে তারা বিয়ে করেন। সে বছরের ৩১ জুলাই চট্টগ্রামের বাসিন্দা রাজ্জাক ঢাকায় এসে দেখা করেন ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে। রাজ্জাক তাঁকে ঢাকা থেকে বরিশালের বিভিন্ন রিসোর্টে নিয়ে যান। সেখানে কৌশলে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে নিজের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এর পর থেকেই শুরু হয় সেই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল।
একই সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্জাক তাঁকে শারীরিকভাবেও অত্যাচার করতেন। অবশেষে ওই নারীকে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ তুলে দিতে চাপ দিতে থাকেন রাজ্জাক। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ভুক্তভোগী ঢাকার সিএমএম আদালতে যৌতুক ও পারিবারিক সহিংসতা আইনে দুটি মামলা করেন। এ ছাড়া গত ৫ মার্চ রাজধানীর শাহবাগ থানায় প্রাণনাশের হুমকি ও প্রতারণার অভিযোগে রাজ্জাকের বিরুদ্ধে জিডি করেন তিনি।
তদন্ত সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে প্রথমে বিয়ের নাটক সাজিয়ে অন্তরঙ্গ হয়েছিলেন রাজ্জাক। পরে তিনি খুলনার একটি কাজী অফিস থেকে ৫০ হাজার টাকার দেনমোহর দিয়ে কাবিনও করেন। তবে বিয়ের শর্ত ছিল, ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কখনও সংসার এবং সন্তান চাইতে পারবেন না। কারণ রাজ্জাক আগেই বিবাহিত। এ ছাড়া তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতা পরিচয়ে চট্টগ্রামের একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক পদে আছেন। রাজ্জাকের বাড়ি বরিশালে। তবে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম মিলিটারি একাডেমির এক নম্বর গেটের পাশে নিজস্ব বাড়িতে থাকেন। জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় গ্রামে একবার হামলারও শিকার হন রাজ্জাক। এ ছাড়া বগুড়া মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় তিনি শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে রাজ্জাকের স্ত্রী চিকিৎসক উম্মে শারমিন বলেন, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সম্পর্ক ও বিয়ের বিষয়টি জানতাম। তবে আমি তাদের কিছুই বলিনি। ছাত্রজীবনে আমার স্বামী বরিশাল ও বগুড়া মেডিকেল কলেজে ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে এখন তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক রাজ্জাক বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়ের পর ফোন কলে বিয়ে করি। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার জন্য তাকে তালাক দিয়েছি। ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ তুলে দিতে চাপ দেওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজেই ফ্ল্যাট কেনার জন্য আমার সঙ্গে ওটা নিয়ে পরামর্শ করে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।